বরগুনা: বরগুনায় স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন ও ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্ত্রী মৌসুমী আক্তার।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে নাবালক তিন সন্তানসহ সংবাদ সম্মেলনে স্বামীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন গৃহবধূ মৌসুমী আক্তার।
মৌসুমী আক্তার বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে বামনা উপজেলার বড় তালেশ্বর গ্রামের মৃত মো. ছত্তার মুন্সির ছেলে নজরুল ইসলাম মুন্সীর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। আমার দুই মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান। গত সাত-আট বছর ধরে আমাকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দিয়ে আসছেন আমার স্বামী নজরুল। স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারাও কোনো সুরাহা দিতে পারেননি। প্রায়ই তারা আমার স্বামী ডেকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আমাদের নাবালক সন্তানদের তার হাতে তুলে দেন। পরে কিছুদিন যেতে না যেতেই নজরুল ইসলামের হিংস্রতা শুরু করে দেন। আমাদের পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। সেই থেকেই আমি স্কুল পড়ুয়া তিনটি নাবালক সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি।
আমার সন্তানদের লেখাপড়া দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। আমি না পারছি সন্তানদের ভরণপোষণ দিতে, না পারছি লেখাপড়া করাতে, না পারছি চিকিৎসা দিতে। ছিন্নমূল পরিবারের কর্তা হিসেবে আমার বাবা-মা বর্তমানে সরকারের দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে রয়েছেন। আমার বাবাও অত্যন্ত দরিদ্র মানুষ। তার ওপর আমি এই তিনটি সন্তান নিয়ে প্রায়ই বাবার পরিবারে হানা দেই।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় স্বামী কর্তৃক নির্যাতিত মৌসুমী ও তার সন্তানরা বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মৌসুমী আরও বলেন, আমার স্বামী নজরুল ইতোপূর্বে আরও চারটি বিয়ে করেছেন। তার আরও সন্তান আছে। আমার সন্তানদের লেখাপড়ার খরচের জন্য কোনো দানশীল ব্যক্তি যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে মা হিসেবে আমি চির কৃতজ্ঞ থাকব।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৌসুমীর বাবা মো. কামাল হোসেন, ১৩ বছরের কন্যা সন্তান মিমি আক্তার, সাত বছরের ছেলে সন্তান মাহিন ও আড়াই বছরের কন্যা সন্তান মাইশা।
এদিকে অভিযুক্ত স্বামী নজরুল ইসলামের মোবাইলফোনে কল করে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, স্ত্রী-সন্তান আমার কাছে থাকেন না, আমি কীভাবে তাদের ভরণপোষণ দেব। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আমার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪
এসআরএস