ঢাকা: রাজধানীর নিউ মার্কেটে অভিযান চালিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রি চক্রের হোতাসহ ৫ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আটকরা হলেন-হোতা মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩০), মো. ফয়সাল হোসেন (২৭), মো. আশিক শেখ (২০), মো. শরিফুল (২৪), ও মো. রাসেল (২৬)।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর নিউ মার্কেটের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ১২টি নেটওয়ার্ক বুস্টার, ১৬টি বুস্টার আউটডোর এন্টিনা, তিনটি রেডিও ট্রান্সমিটার, ১২টি বুস্টার ইনডোর এন্টিনা, তিনটি বুস্টার ক্যাবল, ১৮টি কনভার্টার, ১৫টি চার্জার, ১০টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, তিনটি হাত ঘড়ি, এক টি ড্রাইভিং লাইসেন্স, দুটি এনআইডি কার্ড, ৩৪টি এটিএম কার্ড ও নগদ ৯ হাজার ৫৩০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলিতে র্যাব-৩ প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, চক্রটি ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে বিজ্ঞাপন দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রি করে আসছে। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বিক্রি করত।
অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার টুজি, থ্রিজি এবং ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্ক এর কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। এ কারণে বিভিন্ন অপরাধীরা অপরাধ করতে উচ্চ মূল্যে এসব অবৈধ যন্ত্রপাতি কিনে দুর্গম এলাকায় বসে অপরাধ করে আসছে। এসব যন্ত্র ব্যবহার করে অপরাধীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়ানোর চেষ্টা করে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ বলেন, ফোর-জি রাউটার আমদানির নামে এসকল যন্ত্রাংশসমূহ বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে আসে। এছাড়াও বিভিন্ন চোরাই পথের মাধ্যমেও তারা এসব যন্ত্রাংশ আমদানি করে থাকে। পরবর্তীতে তারা হোয়াটসঅ্যাপে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে এসকল যন্ত্রাংশসমূহ উচ্চমূল্যে বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছে বিক্রি করত। এই চক্রটি বিগত পাঁচ বছরে অজস্র রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয় করেছে। চক্রটি প্রতি সেট এন্টেনা ২০ হাজার টাকা এবং প্রতি সেট রেডিও ট্রান্সমিটার ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছে বিক্রয় করে আসছে।
র্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, বিটিআরসির অনুমোদন ব্যতীত এসব যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ কেনা-বেচা দণ্ডনীয় অপরাধ। চক্রটি পাঁচ বছর ধরে অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রি করছে। চক্রের হোতা জাহাঙ্গীর ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। এরপর সে কিছুদিন একটি মোবাইল কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করে। ২০১৪ সালে সে ঢাকায় এসে সিসি ক্যামেরা মেরামত ও ইনস্টল করার কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে নিজেই নিউমার্কেট এলাকায় ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের ব্যবসা শুরু করে। আমদানি নিষিদ্ধ এসব অবৈধ বুস্টার, ট্রান্সমিটার ব্যবসা শুরু করে। তার সহযোগী আশিক, শরিফুল ও রাসেল সবাই ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের অভিজ্ঞ হওয়ায় জাহাঙ্গীর তার ব্যবসাকে প্রসারিত করার জন্য তাদেরও দলে টানে। তারা টেকশপ বিডি নামে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ বিক্রি করে আসছে।
এসব অবৈধ ডিভাইস বিক্রয়কারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪
এসজেএ/জেএইচ