বান্দরবান: ২১ ফেব্রুয়ারি আর শুক্র-শনিবারের টানা ছুটিতে পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে পার্বত্য জেলা বান্দরবান। সবুজ পাহাড় আর আকাশ দেখতে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের ঢল নেমেছে পাহাড় ঘেরা এ জেলায়।
জেলা শহরের পর্যটনকেন্দ্র মেঘলা, নীলাচল, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, নীলগিরিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো এখন পর্যটকদের কোলাহলে মুখরিত। দীর্ঘদিন পর তিনদিনের ছুটিতে এসব পর্যটনকেন্দ্র এখন নারী, পুরুষ, শিশু বৃদ্ধসহ সবার মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। পাহাড়, নদী, ঝিড়ি-ঝর্ণা আর প্রকৃতির অপরূপ রূপ দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন তারা।
ময়মনসিংহ জেলা থেকে বান্দরবানের নীলাচলে বেড়াতে আসা পর্যটক সুব্রত দাশ বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবান খুবই সুন্দর জেলা। আর ছুটি পেলেই আগে বান্দরবানেই ভ্রমণ করে থাকি। এর আগে কয়েকবার বান্দরবান এসেছি। তবে পাহাড়, নদী আর প্রকৃতির টানে বার বার এখানেই ছুটে আসি।
চট্টগ্রাম লালখান বাজার থেকে বান্দরবান বেড়াতে আসা পর্যটক তাহসিন বাংলানিউজকে জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি আর শুক্র-শনিবারের ছুটি ঘিরে আমরা পরিবার নিয়ে বান্দরবান বেড়াতে এসেছি। এখানে ঘুরে খুব মজা পাচ্ছি। বান্দরবানের যে পরিবেশ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আছে সেগুলোকে পরিকল্পনা করে আরও সাজালে বান্দরবান বিশ্বের কাছে সমাধিত হবে। এতে এই জেলায় পর্যটকের আগমন আরও বাড়বে।
এর আগে দীর্ঘদিন বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমণে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। সম্প্রতি (২২ জানুয়ারি) বান্দরবানের সব পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ায় জেলায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।
টানা ছুটিকে কেন্দ্র করে বান্দরবানের হোটেল-মোটেল আর রির্সোটগুলো পরিপূর্ণ হয়েছে পর্যটকদের আনাগোনায়। অন্যদিকে পর্যটকদের আরও আধুনিক মানের সেবা দিতে এবং আরও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে ব্যস্ত সময় পার করছে হোটেল-মোটেলগুলো।
বান্দরবান সদরের আবাসিক হোটেল হিলভিউয়ের ম্যানেজার মো. পারভেজ বলেন, আমাদের হোটেলে ২১ ফেব্রুয়ারি শতভাগ ও ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি ৭০ শতাংশ বুকিং আছে। পর্যায়ক্রমে আরও পর্যটক বাড়বে বলে প্রত্যাশা আমাদের।
জেলা সদরের হোটেল অরণ্যের মালিক এবং আবাসিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসীম উদ্দীন জানান, ২১, ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি আমাদের হোটেলসহ জেলা সদরের অধিকাংশ হোটেলের কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। আর আগত পর্যটকদের সেবার মান আরও উন্নত করার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বান্দরবান আবাসিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি অমল কান্তি দাশ বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবানে দীর্ঘদিন পরে প্রচুর পর্যটক আসছে। আর পর্যটকদের সার্বিক সহযোগিতা করা এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বান্দরবান আবাসিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সব সদস্যরা সচেষ্ট আছে।
টুরিস্ট পুলিশ, বান্দরবান জোনের ইনচার্জ স্বপন কুমার আইচ বাংলানিউজকে বলেন, দুর্গম পার্বত্য জেলা হলেও অন্যান্য জেলার চেয়ে এই জেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেকটাই ভালো। আর যেকোনো বন্ধ উপলক্ষে জেলায় আগত সব পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। বান্দরবানে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে নিয়মিত টহল দেওয়া হয়। পর্যটকরা যাতে বান্দরবানে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন সেজন্য টুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪
এফআর