ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড, জেনেভা ক্যাম্প, বসিলাসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তাররা হলেন রাজা (৩৫), মো. জালাল (২৫), মো. মৃদুল (২৬), মো. জাহাঙ্গীর (৩৫), মো. শামিম মিয়া (২৪), মো. শহিদ (২৫), মো. শিমুল (২৫), মো. মনিরুল ইসলাম (২৭), মো. সোহেল খান (২৩) ও নুর মোহাম্মদ (২০)।
তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রাজার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা ও মৃদুলের বিরুদ্ধে চারটি মামলার তথ্য জানা গেছে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবি জানায়, গ্রেপ্তাররা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ চালিয়ে আসছিল।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, রাজধানীর উত্তরা ও মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা বেশ সক্রিয়। এসব গ্রুপের সদস্যরা চুরি-ছিনতাই, ইভটিজিংসহ নানা অপরাধে জড়িত রয়েছে। তাদের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অনেকেই অভিযোগ করছেন। তারা দিনে দুপুরে গাড়ি থেকে মোবাইল ফোন টান দিয়ে নিয়ে যায়। উঠতি বয়সী মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবির তেজগাঁও বিভাগ কাজ শুরু করেছে। তারা মোহাম্মদপুর থেকে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি আরও বলেন, এ কিশোর গ্যাং সদস্যরা পৃথক দলে ভাগ হয়ে ছিনতাই করত। দীর্ঘদিন ধরে কিছু বড় ভাইয়ের নেতৃত্বে তারা এ কাজ করত। বিশেষ করে রাতের বেলা চাপাতি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে। দিনের বেলা বড়ভাইদের সঙ্গে ঘুরে।
আমরা বেশ কয়েকজন বড় ভাইয়ের নাম পেয়েছি। তারা যে দলেরই হোক না কেন তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তারা ছিনতাইয়ের জন্য লেগুনা ব্যবহার করে। লেগুনা চালক ও হেলপারও তাদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
হারুন আরও বলেন, কিশোর গ্যাং ও ইভটিজারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় এলাকায় আমাদের অভিযান চলবে। ছিনতাইকারী ও বড় ভাইদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে গোয়েন্দা পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করছি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ডিবির ৪০টিরও বেশি চৌকস টিম রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই কাজ করবে। এখানে কোনো কোনো ভাইয়ের বিষয় না, আমরা যদি তাদের পাই আর আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ, ছিনতাই, ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা ঘটায় তাহলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধীদের কোনো পরিচয় নেই। তাদের একটাই পরিচয় তারা অপরাধী। তারা কোনো দলের সদস্য না। দিনের বেলা বড় ভাইদের সঙ্গে ঘুরবে আর রাতের বেলা ছিনতাই করবে এটা চলবে না।
আমরা ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি কেউ তদবির করার সাহস করেনি। ভবিষ্যতেও করবে না। কেউ যদি বড় ভাইদের নাম বলে বাঁচার চেষ্টা করে আমরা সেই বড় ভাইকেও গ্রেপ্তার করব।
সম্প্রতি আদাবরে গণ ছিনতাইয়ের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের ডিবির টিম ছায়া তদন্ত করছে। আদাবর থানায় একটি মামলা হয়েছে। যেকোনো সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪
পিএম/আরআইএস