ঢাকা, বুধবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অর্থপাচার বন্ধে সরকার শক্ত না হলে দেশ খালি হয়ে যাবে: চুন্নু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪
অর্থপাচার বন্ধে সরকার শক্ত না হলে দেশ খালি হয়ে যাবে: চুন্নু

ঢাকা: বিদেশে অর্থপাচার বন্ধে সরকার শক্ত ব্যবস্থা না নিলে দেশ খালি হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিদেশে অর্থপাচার সম্পর্কে চুন্নু এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ব্যাংকের মাধ্যমে ৮০ শতাংশ অর্থ পাচার হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা প্রতিষ্ঠান আছে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তারা একটা সংবাদ সম্মেলন করে গত দুই তিন দিন আগে। সেই সংবাদ সম্মেলনে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান বলেন, তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ২৩ লাখ কোটি টাকা সন্দেহজনক লেনদেন ছিল, ১৪ হাজার ১০৬টি সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, এ লেনদেনের মাধ্যমে বিদেশে যে টাকা পাচার হয়, মানিলন্ডারিং তার ৮০ শতাংশ হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। আরও বলেছেন, একবার মানিল্ডারিং হয়ে গেলে এটাকে আর ফেরত আনার কোনো সুযোগ নাই। তিনিই (বিএফআইইউ প্রধান) বলছেন, এ বিষয়ে রাজনৈতিকভাবে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত যদি নেওয়া না হয়, তাহলে কিছু করার মতো ক্ষমতা নেই। কারণ পাচার করা টাকা যদি আনতে হয়, একটা মাত্র দৃষ্টান্ত আছে সিঙ্গাপুর থেকে মৃত আরাফাত রহমান কোকোর টাকা ফেরত এসেছিল। আর কোনো টাকা ফেরত আনা সম্ভব হয়নি।  

‘এ কারণে দেশ থেকে টাকা যেসব দেশে যায় তাদের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। সিঙ্গাপুর, দুবাই, কানাডা, ইউএসএ, ইউকেসহ বিভিন্ন দেশে, এমনকি আমাদের একজন সাবেক মন্ত্রীর- ব্লুমবার্গে এসেছে তার ২৬০টি বাড়ি আছে বিদেশে। আমরা এগুলো বিশ্বাস করতে চাই না, এ নিউজ আসছে, পাচার হচ্ছে- এগুলোর বিষয়ে এর আগেও অনেকবার সংসদে বলেছি। সাবেক অর্থমন্ত্রী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। ’

চুন্নু বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩’শ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম। সব থেকে বেশি অনিয়ম হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমান সরকার, সরকার যদি শক্তভাবে এইগুলো হ্যান্ডেল (সামলানো) না করে তাহলে তো দেশ খালি হয়ে যাবে, ব্যাংক তো খালি হয়ে গেছে, ব্যাংকের মাধ্যমেই যায়। এগুলো দেখার দায়িত্ব কার, আমরা কোথায় যাবো? অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রীরা যদি এগুলো না দেখেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তারা চুপচাপ বসে থাকে। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার হয় তারাই বলছেন, তাদের রিপোর্ট, তারা কী করেছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক গত পাঁচ বছরে কেন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।  

‘হাসপাতালে এনডোসকপি করতে গিয়ে দেখলাম মানুষটা আর নেই। খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। আমার মনে হয় এত এলোমেলো হচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, প্রধানমন্ত্রী কঠোর হন। মানুষ এখন ভাবছে সরকারি দল, বিরোধী দল কী করে, এর জবাবদিহি কোথায়। এ বিষয়ে যদি শক্ত না হয় সরকার তাহলে আমাদের যাওয়ার তো জায়গা নাই। এসব বিষয়ে সরকার কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেবেন, নিয়ন্ত্রণ করবেন এ দাবি করি’, যোগ করেন এ সংসদ সদস্য।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪
এসকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।