ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গাছ কেটে বৈশাখী মঞ্চ নির্মাণ, ইবি ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিবাদ

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২৪
গাছ কেটে বৈশাখী মঞ্চ নির্মাণ, ইবি ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিবাদ

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) একাধিক বৃক্ষ নিধন করে ‘বৈশাখী মঞ্চ’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই মঞ্চ নির্মাণে ক্যাম্পাসের অনুষদ ভবন এবং ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের মাঝামাঝি জায়গার পুরোনো গাছ কাটা হয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন।

সোমবার (০৪ মার্চ) সকাল ১০টায় অনুষদ ভবন সংলগ্ন বটতলা পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ।  

এসময় সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মুখলেসুর রাহমান সুইট, ইবি সংসদের সহ-সভাপতি সাদিয়া মাহমুদ মীম ও দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেনসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।  

এর পর বেলা সাড়ে ১১টায় একই স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ‘ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন’ এর সদস্যরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা, ‘সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বৃক্ষ নিধন বন্ধ হোক’, ‘সবুজের রক্তক্ষরণ বন্ধ করো’, ‘অ্যাকাডেমিক ভবনের পাশে মুক্ত মঞ্চ চাই না’, ‘প্রকৃতির ক্ষতি করে স্থাপনা তৈরি বন্ধ করো’, ‘প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়ন চাই না’ ও ‘উন্নয়নের নামে গাছ কাটা চলবে না’ সহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন।

এছাড়া বৃক্ষ নিধন করে বৈশাখী মঞ্চ নির্মাণের প্রতিবাদে গণ স্বাক্ষর সম্বলিত প্রতিবাদ লিপি ও ব্যঙ্গ চিত্র প্রদর্শন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।  

এর আগে, সকালে গাছ কাটার শ্রমিকরা গাছের ডাল-পালা ভ্যানে করে নিয়ে যেতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের কাজে বাধা দেন। এসময় তারা ক্যাম্পাসে ৩০০টি গাছ রোপণ করে এই গাছ নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

এদিকে বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদে কোষাধ্যক্ষ বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েস।

তাদের দাবিগুলো হলো- উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে, কেটে ফেলা গাছের ক্ষতিপূরণ স্বরুপ দ্বিগুণ বৃক্ষ রোপণ ও পরিচর্যা করতে হবে, বনায়ন রক্ষার্থে সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ প্রণয়ন করা, সুপরিকল্পিত বনায়ন ও পরিচর্যা করা ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যপূর্ণ ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন করা।

ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন টিম লিডার ইয়ারাবি আঁখি বলেন, গাছ আমাদের পরম বন্ধু এটা ছোটবেলা থেকে জানি। উন্নয়নের নামে হুটহাট গাছ কেটে কোন উন্নয়ন বয়ে আনবে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ গাছগুলো রোদের সময় আমাদের ছায়া দিত।  

ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মুখলেসুর রাহমান সুইট বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি একাডেমিক ভবনের মাঝামাঝি একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এই বৈশাখি মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষার ব্যাঘাত ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি বৃক্ষ নিধন করে বৈশাখি মঞ্চ নির্মাণ বন্ধ না করে তাহলে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গরে তুলবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া বলেন, সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেই গাছ কাটা হয়েছে। কাজের প্রয়োজনে কোনো কোনো সময় গাছ কাটা লাগে। প্রয়োজনে পরে গাছ লাগানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।