ঢাকা: পারমাণবিক প্রকল্পসহ সব ক্ষেত্রের জন্য দক্ষ পেশাদার তৈরির কাজ মাধ্যমিক স্কুল থেকেই শুরু করা জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
রাশিয়ায় চলমান বিশ্ব যুব উৎসবে আয়োজিত ‘মানব পুঁজি: বর্তমান বিশ্বে যুবকদের জন্য প্রকৃত সম্ভাবনার সন্ধানে’ শীর্ষক এক সেমিনারে বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রসাটম) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, দক্ষ যুবকরা শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নেই ভূমিকা রাখে না, জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নেও তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
বক্তারা বর্তমান বিশ্বে প্রতিভাবান ও উচ্চাভিলাষী যুবকদের জন্য সম্ভাবনা; রাষ্ট্র, করপোরেট প্রতিষ্ঠান এবং এনজিওর মাধ্যমে সম্ভাবনাময় যুবকদের সম্পৃক্ত করা ইত্যাদি বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন রসাটম করপোরেট একাডেমির মহাপরিচালক ইউলিয়া উঝাকিনা, অস্ট্রিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কারিন নেইসল, স্বনামধন্য রুশ ব্যবসায়ী কিরিল সামালভ প্রমুখ।
ইউলিয়া উঝাকিনা জানান, রসাটমের অধিকাংশ প্রকল্পই বৃহৎ স্কেলের এবং এগুলোর জীবনকাল অনেক দীর্ঘ। যেমন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যেগুলোর উদ্বোধন থেকে ডিকমিশনিং পর্যন্ত সময়কালের ব্যাপ্তি প্রায় একশ বছর। এমতাবস্থায়, আমাদের বিবেচনায় থাকে যে, এসব প্রকল্পের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় যুবকরা দায়িত্ব নেবেন। অতএব, আমি মনে করি মাধ্যমিক স্কুল থেকেই উচ্চ দক্ষ পেশাদার তৈরির কাজ শুরু করা জরুরি।
তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ পেশাদারদের ক্যারিয়ার সম্ভাবনা একটি দ্বিমুখী বিষয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, চাকরিদাতাদের দায়িত্ব হলো, যুবকদের ভেতরের সম্ভাবনাকে খুঁজে বের করে তা বিকশিত করার সুযোগ করে দেওয়া। যুবকদের দায়িত্ব হলো তাদের নিজের শক্তি সম্পর্কে বুঝতে পারা এবং তার উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
তিনি আরও বলেন, আমরা রসাটমে আমাদের এমপ্লয়িদের জন্য পেশাগত ও ব্যক্তিগত সুযোগ সৃষ্টি করে থাকি, যাতে তারা সঠিকভাবে তাদের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারেন। এছাড়া রসাটমের সঙ্গে এখনো সম্পৃক্ত হয়নি, এমন স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও আমরা কাজ করে থাকি। স্কুল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করার সময় আমরা তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিই, কারণ তারাই এ শিশুদের সক্ষমতা খুঁজে বের করতে এবং সে অনুযায়ী তাদের ভবিষ্যৎ যাত্রা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
সেমিনারে আন্তর্জাতিক শিক্ষা পার্টনারশিপের বিষয়টিও বিশদভাবে আলোচিত হয়। আলোচকরা একমত হন যে, শিক্ষাক্ষেত্রে বৈশ্বিক সহযোগিতার শিক্ষা, বিজ্ঞান, শিল্প, উন্নয়নে যেমন সহায়ক তেমনিভাবে নতুন কর্মস্থল সৃষ্টি, জীবনমানের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে নিশ্চিত হয় টেকসই বৈশ্বিক উন্নয়ন।
সারা বিশ্বে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর জন্য রসাটম রুশ এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞদের ব্যাপক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
এ ছাড়া যেসব দেশে রসাটম তাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, সেখানে পরমাণু শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়ও সামগ্রিক সহযোগিতা দিয়ে থাকে।
বিশ্ব যুব উৎসবে প্রায় বিশ হাজার তরুণ ও যুবক অংশগ্রহণ করছেন। তাদের প্রত্যেকেই শিক্ষা, বিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, সংস্কৃতি, স্বেচ্ছা শ্রম ও চ্যারিটি, ব্যবসা ও মিডিয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছেন।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েক ডজন দেশের প্রায় দশ হাজার যুব প্রতিনিধিও রয়েছেন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে। শুরুর পর থেকেই রসাটম বিশ্ব যুব উৎসবের অন্যতম প্রধান পার্টনার হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২৪
এসকে/আরএইচ