পাবনা: পাবনায় পান খাইয়ে এক গরু ব্যবসায়ীর ১৮ লাখ টাকা লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ শ্যামলী পরিবহনের সুপারভাইজার প্রদীপের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাস যাত্রী মো. জাহাঙ্গীর শনিবার (২৩ মার্চ) পাবনা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুন্সী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
এর আগে সোমবার (১৮ মার্চ) চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে পাবনায় পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে শনিবার (২৩ মার্চ) তার জ্ঞান ফিরলে রাতে তিনি এ তথ্য জানান।
অভিযোগে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে পাবনায় গরু কিনতে আসার পথে বাসের মধ্যেই তাকে অচেতন করে প্রায় ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী গরু ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, শ্যামলী পরিবহনের সুপারভাইজার যাত্রাপথে পান খাইয়ে তাকে অচেতন করে হাতিয়ে নিয়েছে ওই টাকা। এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
গরু ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে এক যুগ আগে থেকে প্রতি সোমবার গরু কেনার জন্য পাবনার অরনখোলা হাটে আসেন তিনি। আর নিয়মিত যাতায়াত করায় সুসম্পর্ক হয় শ্যামলী পরিবহন বাসটির স্টাফদের সঙ্গে।
জাহাঙ্গীরের অভিযোগ, এক যুগ চলার পথে এতদিন কোনো সমস্যা না হলেও হঠাৎ করেই গত সোমবার (১৮ মার্চ) পরতে হয় বিপাকে। ১৮ লাখ টাকা কোমরে বেঁধে সেদিন রাত ৮টার দিকে ৮ নাম্বার শ্যামলী পরিবহন বাসের টিকিট কেনেন তিনি। এ সময় রাখালের কাছেও ছিল ৩ লাখ টাকা। ওইদিন শ্যামলী পরিবহন বাসটির সুপারভাইজার প্রদীপ তাকে ৪ নাম্বার শ্যামলী পরিবহন বাসে তুলে দেন।
বাসটি পাবনায় পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে সুপারভাইজার প্রদীপ দুজনকেই দুটি পান খেতে দেন। এ সময় ভুক্তভোগীরা পান খেতে থাকলে বাসটির সুপারভাইজার প্রদীপ এসে তাদের ঘুমাতে বলেন। আগামীকাল গরমের মধ্যে সারাদিন গরু কিনবেন বলে বিশ্রাম নিতে বলেন তাদের। এরপরের ঘটনা আর কিছুই মনে নেই তাদের।
এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন শ্যামলী গ্যাস পাম্পের পেছনের একটি জায়গায় পড়ে আছেন তিনি। তার কাছে থাকা ১৮ লাখ টাকা নেই। তবে তার দাবি কোমরে বেঁধে রাখা ১৮ লাখ টাকা না থাকলেও পকেটে থাকা ১০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এবং তার রাখালের কাছে থাকা তিন লাখ টাকাও আছে।
এদিকে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
পান খাওয়ানোর বিষয়সহ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাসটির অভিযুক্ত সুপারভাইজার প্রদীপ। তিনি বলেন, আমি কাউরে কোনো চা অথবা পান খাওয়াইনি। কোনো যাত্রীকে কোনোদিন পানিও খাওয়াইনি। এসব মিথ্যা বানোয়াট কথা।
তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৪
আরএ