ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

স্বাধীনতা দিবসে নরসিংদীতে ড্রোনের সাহায্যে পতাকা উত্তোলন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
স্বাধীনতা দিবসে নরসিংদীতে ড্রোনের সাহায্যে পতাকা উত্তোলন

নরসিংদী: নরসিংদীতে দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টিপারপাস অক্টোকপ্টার ড্রোনের মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।  

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে নরসিংদী মুসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে নরসিংদী সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিক্স ল্যাবের উদ্ভাবিত এই ড্রোন পরিচালনা করে পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম।

যা দেশের ইতিহাসে এই প্রথম।  

জানা গেছে, নরসিংদী সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিক্স ল্যাব ২০১৬ সাল থেকে ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে আসছে। নরসিংদীর মাধবদীতে ৩০০ জন তরুণ উদ্ভাবক সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিক্স ল্যাবের সদস্য। তারা নিত্য নতুন উদ্ধাবনের নেশায় দিনরাত কাজ করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় অর্জন করেছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অসংখ্য সম্মাননা ও স্বর্ণপদক। দীর্ঘ সাত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২০২৩ সালে উদ্ভাবন করে দেশের সব থেকে বড় মাল্টিপারপাস অক্টোকপ্টার ড্রোনটি। এছাড়া নরসিংদী সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিক্স ল্যাব সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এ আই অ্যাকসিডেন্ট প্রিভেন্টেশন সিস্টেম, সেনাবাহিনীদের জন্য সার্ভেলেন্স, অটোনমাস, ফায়ার ফাইটার, অ্যাগ্রিকালচার ড্রোন তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে করোনা মহামারি প্রতিরোধে তৈরি করেছে কোভিড-১৯ অটোমেটিক হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন সিস্টেম। অন্ধদের জন্য তৈরি করেছে স্মার্ট গ্লাসেস ফর ব্লাইন্ড। কৃষকদের জন্য তৈরি করেছে শব্দ কীটনাশক এবং গবেষণা করেছে ভূমিকম্পের আগাম সচেতনতা যন্ত্র নিয়ে।  

বিভিন্ন প্রজেক্ট তৈরি এবং গবেষণার ফলশ্রুতিতে সেরা উদ্ভাবনীর মাধ্যমে ছয়বার জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে সম্মাননা পেয়েছে নরসিংদী সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিক্স ল্যাব। চারবার বিভাগীয় কমিশনের কাছ থেকে সম্মাননা অর্জন করেছে। সম্প্রতি ২০২৩ সালে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে পুরো বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ তরুণ উদ্ভাবক দল হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। ২০২৩ সালে মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফেয়ারে প্রথম স্থান অধিকারের মাধ্যমে স্বর্ণপদক অর্জন করেছে তারা।  

এই উদ্ভাবন সম্পর্কে জানতে চাইলে নরসিংদী সায়েন্স অ্যান্ড রোবোটিক্স ক্লাবের প্রধান নির্বাহী রাফি হোসাইন বলেন, আমাদের ল্যাবের সব সদস্যদের নিরলস পরিশ্রমে নিজস্ব প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ড্রোনটি তৈরি করা হয়েছে। ড্রোনটির বাজার মূল্য ছয় থেকে সাত লাখ টাকা হলেও আমরা এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় তৈরি করেছি। স্বাধীনতা দিবসে ড্রোনটি পতাকা নিয়ে আকাশে উড়ার মাধ্যমে জানান দিয়েছে নরসিংদী প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে মাইলফলক। আমাদের এই উদ্ভাবন আগামী দিনের প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

প্রধান উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের সক্ষমতার জানান দিয়েছে, সরকারি সহায়তা পেলে আমরা আরও নতুন নতুন উদ্ভাবন করতে পারবো। দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিজয়ের স্বাক্ষর রেখে জাতীয় পতাকা মান উজ্জ্বল করতে পারবো।

জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, নরসিংদী জেলার কৃতি সন্তানদের উদ্ভাবিত এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার, যা এ দেশের ভবিষ্যৎ উদ্ভাবকদের প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার সব থেকে বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আমরা বাঙালি জাতির অহংকার লাল সবুজের পতাকা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আকাশে উড়ানো হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির, তথ্য নির্ভর ও সম্রাট বাংলাদেশ।  

নরসিংদীতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের নতুন নতুন আবিষ্কারে উৎসাহ প্রদানে জেলা প্রশাসন কাজ করছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।