বরিশাল: বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখা এবং উন্নত পুলিশি সেবা প্রদানের লক্ষে ক্রাইম কন্ট্রোল, ট্রাফিক কন্ট্রোল এবং সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিংয়ের ‘ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’ চালু করা হয়েছে।
রোববার (৩১ মার্চ) দুপুর ১২টায় নগরের বান্দরোডস্থ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের তৃতীয় তলায় ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার মো. জিহাদুল কবির।
এরআগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি জানান, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের তৃতীয় তলায় ২ হাজার ৫০৮ স্কয়ার ফুট আয়তনের একটি কক্ষে স্থাপিত এ অত্যাধুনিক কমান্ড সেন্টার থেকে ২৬০টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ২৪/৭ বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকাকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকায় নিয়োজিত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের কার্যক্রম নজরদারি করাসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র নজরদারি করার জন্য মহানগরী এলাকায় ২৬০টি উন্নত সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও দক্ষ জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ সেল তিনভাবে কাজ করবে।
প্রথমত, এ সেন্টার থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে বরিশাল মহানগরী এলাকার আইন-শৃঙ্খলা চিত্র সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হবে। এছাড়াও মহানগরী এলাকায় অনুষ্ঠিত যেকোনো ধরণের জনসমাবেশের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষা করা; চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি সহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধীকে চিহ্নিত করণ এবং পূর্বে ঘটে যাওয়া অপরাধ সহ আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত প্রকৃত লাইভ ভিডিও চিত্র ধারণ ও সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
দ্বিতীয়ত, স্থাপিত সিসি ক্যমেরার মাধ্যমে সহজেই বরিশাল মহানগরীর ব্যস্ততম সড়কগুলোর যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও যানজট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তাৎক্ষণিকভাবে যানজট নিয়ন্ত্রণে বাস্তবসম্মত নির্দেশনা প্রদান করা সম্ভব হবে। এ লক্ষে এ সেন্টারে একজন ট্রাফিক সাব ইন্সপেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনসহ দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে এ সেল কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
আর তৃতীয়ত, স্থাপিত সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের চারটি থানার পুলিশের সেবা দান কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। বিশেষ করে ডিউটি অফিসারের কক্ষ, গারদ খানায় আসামিদের বিষয়টি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন অপরাধীরা এখন ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অপরাধ করছে। বাস্তবতা হলো এ অপরাধ দিন দিন বাড়ছে। আপনারা জেনে খুশি হবেন এ কমান্ড সেন্টারে স্থাপিত আইসিটি অ্যান্ড মিডিয়া সেলে একঝাঁক দক্ষ জনবলের মাধ্যমে ফেসবুক, ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় যেকোনো ধরনের গুজব প্রতিরোধ এবং অনলাইন ভিত্তিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য ২৪/৭ সাইবার পেট্রোলিং করা হচ্ছে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বরিশাল সংক্রান্ত যেকোনো ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হলে তা সাইবার পেট্রোলিং টিমের নজরে চলে আসে। এ সেন্টার থেকে সার্বক্ষণিকভাবে বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে প্রকাশিত সব প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক নিউজ সাইটে প্রকাশিত সংবাদ পর্যবেক্ষণ এবং প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, এছাড়া ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’ থেকে অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করার লক্ষে দক্ষ জনবলের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে বিদ্যমান সব ইউনিটসহ অপারেশনাল ফোর্সের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে এ সেন্টার থেকে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিসহ স্বাভাবিক সময়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলের প্রকৃত তথ্য জানা, ফোর্স প্রেরণ, নিয়ন্ত্রণ এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সহজে তথ্য আদান প্রদান করা সম্ভব হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার নাগরিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সহযোগিতায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ তার সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করে নাগরিকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। ‘ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’ হবে এ প্রচেষ্টার অন্যতম হাতিয়ার বলে জানান পুলিশর এ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪
এমএস/জেএইচ