ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সোমালিয়ায় জিম্মি নোয়াখালীর দুই নাবিকের পরিবারে নেই ঈদ আনন্দ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৪
সোমালিয়ায় জিম্মি নোয়াখালীর দুই নাবিকের পরিবারে নেই  ঈদ আনন্দ

নোয়াখালী: ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজে জিম্মি নোয়াখালীর দুই নাবিক আনোয়ারুল হক রাজু ও মোহাম্মদ ছালেহ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে পরিবারের মাঝে নেই ঈদের আমেজ। ঈদ সামনে রেখে তাদের পরিবারে হচ্ছে না কোনো ধরনের কেনাকাটা।

নেই ভালো কিছু রান্নার প্রস্তুতিও।  

আগের ঈদগুলোতে পরিবারে খুশি থাকলেও এবার ঈদ তাদের কাছে নীরব কান্না, শঙ্কা ও অনিশ্চিত প্রতীক্ষার। পরিবারের উপার্জনশীল প্রিয় ব্যক্তি মহাসাগরে জিম্মি। তাই তো এই দুই পরিবারের ঈদের আনন্দ হারিয়ে গেছে দুঃখের সাগরে।  

গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে ২৩ জন নাবিকসহ অপহরণ করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। ২৩ নাবিকের মধ্যে রয়েছেন, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের নাবিক রাজু (২৭) ও চাটখিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নের সিংবাহুড়া গ্রামের নাবিক মোহাম্মদ ছালেহ আহমদ (৪৩)।  

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নাবিক রাজুর বাড়িতে এসে ঈদ করার কথা ছিল। ঈদের পরে রাজুর বিয়ে উপলক্ষ করে বাড়িতে নতুন ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে রাজু সবার ছোট। গত বছর নভেম্বর মাসের শেষ দিকে রাজু সিঙ্গাপুর থেকে জাহাজে ওঠে।  

এরপর প্রথম রমজান থেকে ছেলের জিম্মি দশায় বদলে গেছে পরিবারের সব চিত্র। ছেলের স্মৃতিচারণ করে এখন বাবা মাস্টার আজিজুল হক ও মা দৌলত আরা বেগম শংকায় উৎকণ্ঠায় অস্থির সময় পার করছেন। রাজুর ভাই-বোনসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের ঈদ আনন্দও নিরানন্দের চাদরে ঢেকে গেছে।

নাবিক রাজুর বাবা মাস্টার আজিজুল হক, মা দৌলত আরা বেগম, বড় ভাই জিয়াউল হক রনি, বড় বোন কামরুন নাহার রুমি সবার সঙ্গে কথা হয়। সবার একটাই কথা রাজুসহ জিম্মি সব নাবিক যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরে আসে।

অপরদিকে স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে চাটখিল উপজেলার নাবিক মোহাম্মদ ছালেহ আহমেদের ছোট পরিবার। তিনিই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ছালেহ আহমদ গত বছর ঈদ করেছেন কর্মস্থলে। স্ত্রী ও তিন কন্যার আশা ছিল এবার তাদের সঙ্গে ঈদ করবেন।  

কিন্তু স্বামী জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার খবরে এলোমেলো হয়ে যায় স্বাভাবিক জীবন। তিন মেয়েকে নিয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ ছালেহ আহমেদের স্ত্রী তানিয়া আক্তার। যেন তারা বেঁচে থেকেও মৃত। তানিয়া ছোট ছোট তিন মেয়েকে নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে শঙ্কা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন স্বামীর। একেবারে নিকট আত্মীয় ছাড়া কারো সঙ্গে কথা বলছেন না।

অপহৃত নাবিকদের ভাগ্যে কি ঘটবে সেই শঙ্কায় ঈদের আনন্দ নেই জিম্মি নাবিকদের স্বজনদের। তবে সবার প্রত্যাশা এমন উৎকণ্ঠার সময় পেরিয়ে ফিরে আসুক তাদের স্বজন।  

তারাও নিজেরা নিজেদের সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করছেন এখনো সময় আছে তারা ফিরবে। সরকার ২৩ জন নাবিককে দ্রুত ফিরিয়ে আনবে এমনটাই প্রত্যাশা স্বজনদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।