রাজশাহী: বদলি হয়ে এসেও অফিসে ঢুকতে পারছেন না রাজশাহীর পবা উপজেলার নতুন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন। তাই বুধবার (১৭ এপ্রিল) তিনি অফিসের সামনের বেঞ্চে বসেই দাপ্তরিক কাজকর্ম শুরু করেছেন।
প্রায় ছয় বছর ধরে পবায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে ছিলেন শিমুল বিল্লাহ সুলতানা। গত ২৮ মার্চ শিমুল বিল্লাহকে নাটোর জেলার বড়াইগ্রামে বদলি করা হয়। একই প্রজ্ঞাপনে বড়াইগ্রামের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা খাতুনকে পবায় বদলি করা হয়। গত ৩ এপ্রিল আরেক প্রজ্ঞাপনে শিমুল বিল্লাহ সুলতানাকে বড়াইগ্রামে রেখেই হাবিবা খাতুনকে রাজশাহীর দুর্গাপুরে পদায়ন করা হয়। আর রাজশাহীর পবায় বদলি করা হয় দুর্গাপুরের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুনকে। সমস্যা হচ্ছে, এমন আদেশর পর এখন এই তিন কর্মকর্তাই শহরের কাছে থাকা পবা উপজেলায় থাকতে চাচ্ছেন।
বুধবার দুপুরে পবা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, কর্মচারীদের দপ্তর খোলা থাকলেও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কক্ষটি তালাবদ্ধ। বাইরে বসে দাপ্তরিক কাজকর্ম করছেন সর্বশেষ বদলি হয়ে আসা কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন।
তিনি বলেন, সর্বশেষ আদেশে গত ৩ এপ্রিল তাকেই পবা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়েছে। এরপর ৮ এপ্রিল তিনি জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে যোগদান করেছেন। কিন্তু পবায় এসে দেখেন অফিসটি তালাবদ্ধ। বদলি হওয়া কর্মকর্তা হাবিবা খাতুন তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। তাই গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে তিনি নিজেই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। অফিস তালাবদ্ধ থাকায় আজকে বাইরে থাকা বেঞ্চে বসেই কাজকর্ম শুরু করেছেন।
এদিকে হাবিবা সুলতানা জানিয়েছেন, পবা উপজেলার এই অফিসে বদলি হয়ে আসার এক সপ্তাহের মধ্যেই তাকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় বদলি করা হয়। কিন্তু দুর্গাপুরে তার বাবার বাড়ি, শ্বশুরবাড়িও সেখানে। তাই ওইখানে তিনি কাজ করতে চান না। আর সেজন্যই তিনি পবার দায়িত্বটি এখনও ছাড়েননি। তিনি পবাতেই থাকতে চান।
এছাড়া একই ইচ্ছের কথা জানিয়ে বদলি হওয়া কর্মকর্তা শিমুল বিল্লাহ বলেন, গত ২৮ মার্চ তার বড়াইগ্রামে বদলির আদেশ হয়। কিন্তু তিনি বুধবার (১৭ এপ্রিল) পর্যন্ত সেখানে যোগদান করেননি। কারণ তার বাড়ি রাজশাহী শহরে। বড়াইগ্রামে যাতায়াত তার জন্য কষ্টকর। আর তার স্বামী থাকেন ঢাকায়। সেখানে বদলি করা হলেও হতো। তাই তিনি মন্ত্রণালয়ে যাবেন। কান্নাকাটি করে হলেও বিষয়টি বোঝাবেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফাতেমা খাতুন পড়েছেন বিপাকে। তিনি বলেন, এর আগে ২০২২ সালের ৪ জুলাই তাকে দুর্গাপুর থেকে পবায় বদলি করা হয়েছিল। তখন শিমুল বিল্লাহ সুলতানা তাকে পবায় যোগদান করতে দেননি। ওই সময় তিনি দেড় মাস ঘুরেও যোগদান করতে পারেননি। একইভাবে শিমুল বিল্লাহও তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে অফিসে তালা দিয়ে রাখতেন। বিষয়টি জানানোর পর রাজশাহী মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপপরিচালক শবনম শিরিনও তাকে কোনো সহযোগিতা করেননি। পরে শিমুল বিল্লাহর তদবিরে ২১ আগস্ট ওই বদলির আদেশ স্থগিত করা হয়।
ফাতেমা বলেন, তার স্বামী অসুস্থ। বছরে কয়েকবার ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। তিনি অফিসে গেলে রাজশাহী শহরের বাসায় স্বামী একাই থাকেন। শহরের কাছাকাছি পবার যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় তিনি এখানে থাকতে চান।
এবিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি রাজশাহী মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপপরিচালক শবনম শিরিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
এসএস/এমজে