ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনায় কোরবানিযোগ্য পশু চাহিদার চেয়ে সাড়ে তিন লাখ বেশি

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৪
খুলনায় কোরবানিযোগ্য পশু চাহিদার চেয়ে সাড়ে তিন লাখ বেশি

খুলনা: পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে খুলনায় কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও খামারিরা। এ বছর খুলনা বিভাগের দশ জেলায় কোরবানি উপযোগী পশুর সংখ্যা ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৫টি।

আর চাহিদা চচ্ছে ১০ লাখ ৫ হাজার ৭৭০টি। সে হিসেব অনুযায়ী এবারে জেলায় কোরবানির পশুর সংখ্যা চাহিদার চেয়ে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৯৫টি বেশি।

এ কারণে কোরবানির পশুর সংকট হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই বলে জানিয়েছে খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফত।

সূত্র জানায়, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় প্রায় ১০ লাখ ৫ হাজার ৭৭০টি পশু কোরবানির সম্ভাবনা আছে। খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে এই বিভাগে ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৫টি কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ৪ লাখ ৯ হাজার ৯৬৫টি, বলদ ৫৮ হাজার ২৮৯টি, গাভী ৬৮ হাজার ৭৯০টি, মহিষ ৫ হাজার ৬৫৪টি, ছাগল ৭ লাখ ৬০ হাজার ৪৯৫টি, ভেড়া ৪৯ হাজার ৫২৫টি ও পশু অন্যান্য ৮৪৭টি।

মোট কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে খুলনায় প্রায় ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৭৮টি, বাগেরহাটে প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার ৪১৩টি, সাতক্ষীরায় প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার ৬৫৯টি, যশোরে প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার ৬১৭টি, ঝিনাইদহ জেলায় ২ লাখ ১৮ হাজার ৪৩১টি, মাগুরায় ৭৮ হাজার ৫৯১টি, নড়াইলে ৫২ হাজার ৫৪৭টি, কুষ্টিয়ায় ১ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৯টি, চুয়াডাঙ্গায় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪০২টি, মেহেরপুরে ১ লাখ ৯০ হাজার ৮৩৮টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

ফলে কোরবানির পশুর জন্য কারো মুখাপেক্ষী হতে হবে না। বরং অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে আরও ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৯৫টি পশু দেশের অন্য বিভাগে পাঠানো হবে।

খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২৩ সালে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ১১ লাখ ৮২ হাজার ৯৯৮টি কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে খুলনায় ছিল প্রায় ৯২ হাজার ৪০০টি, বাগেরহাটে প্রায় ১ লাখ ২ হাজার ৩০০টি, সাতক্ষীরায় প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার, যশোরে প্রায় ৮০ হাজার ১০০টি, ঝিনাইদহ জেলায় ২ লাখ ৫ হাজার, মাগুরায় ২৬ হাজার ৮৫০টি, নড়াইলে ৫৪ হাজার ৯০০টি, কুষ্টিয়ায় ১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৫০টি, চুয়াডাঙ্গায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৫০টি, মেহেরপুরে ১ লাখ ৯০ হাজার ৫০০টি গবাদি পশু ছিল।

প্রস্তুতকৃত পশুর মধ্যে ষাঁড় ছিল ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৫৭টি, বলদ ৪৪ হাজার ২৮৮টি, গাভী ৬৩ হাজার ১৯২টি, মহিষ ৫ হাজার ৫৬টি, ছাগল ৬ লাখ ৯৭ হাজার ৮২৩টি, ভেড়া ২৮ হাজার ৯৫৭টি। উদ্বৃত্ত ছিল ৩ লাখ ৫৪ হাজার পশু। খুলনা বিভাগে গত বছর ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮১টি পশু কোরবানি করা হয়।

খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক ডা. মো. লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে এ বিভাগে এবার ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৫টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যদিও পশুর চাহিদা আছে ১০লাখ ৫ হাজার ৭৭০টি। ফলে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৯৫টি।

তিনি আরও বলেন, আমরা খামারিদের পরামর্শ দিয়েছি স্টেরয়েড হরমোন ও কেমিক্যাল কেউ গবাদি পশুকে খাওয়াবেন না। পাশাপাশি অনেকে গবাদি পশুকে পোলট্রি ফিড বা বয়লার ফিড খাওয়ান যা করা যাবে না। গরুকে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে। অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান গরু যদি হাসিয়ে যায় তাহলে হিট স্টোকের সম্ভবনা থাকলে ২-৩ বার গোসল করানো যেতে পারে না। তা না হলে ১ বার গোসল করাবেন। খামারে হিট ওয়েভ বা গরম বাতাস কমাতে চারপাশে ও চালের ওপর পানি ছিটালে পরিবেশ ঠাণ্ডা থাকবে।

ডুমুরিয়ার গুটুদিয়ার বিসমিল্লাহ্ এগ্রো ফার্মের ম্যানেজার কামাল হোসেন সুজন বাংলানিউজ বলেন, সুষম খাদ্য ও প্রাকৃতিক উপায়ে উৎকৃষ্টমানের বড় বড় ষাঁড় ও বলদ গরু লালনপালন করা হয় এখানে। ফলে এর ব্যাপক চাহিদা আছে। আমাদের খামারে প্রায় ৬৭টি কোরবানিযোগ্য ষাঁড় আছে। আকার ভেদে যার দাম ৬০ হাজার থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত।

বটিয়াঘাটার মেসার্স পূরবী এগ্রো ফার্মের ম্যানেজার মো. সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ফার্মে ২০টি কোরবানি যোগ্য গরু আছে। সর্বনিম্ন দেড় থেকে সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকার গরু আছে এ ফার্মে।

 

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২৪
এমআরএম/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।