ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নির্বাচনী ‘অস্বস্তি’ কাটিয়ে সামনে এগোনোর বার্তা ডোনাল্ড লু’র

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২৪
নির্বাচনী ‘অস্বস্তি’ কাটিয়ে সামনে এগোনোর বার্তা ডোনাল্ড লু’র

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যে ‘অস্বস্তি’ তৈরি হয়েছিল, তা কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়ে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। তবে মানবাধিকার, শ্রম খাত সংস্কার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ইত্যাদি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান, তার কোনো পরিবর্তন হয়নি, সেটিও স্পষ্ট করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। আর সে কারণে ঢাকা-ওয়াশিংটন ঘিরে কিছুটা ‘অস্বস্তি’ তৈরি হয়েছিল। তবে ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফরের মধ্যে দিয়ে তা অনেকটাই কেটেছে। ডোনাল্ড লু স্পষ্ট করে বলেছেন, তার ঢাকা সফর দুই দেশের জনগণের মধ্যে নতুন করে আস্থার জায়গা তৈরি করার জন্য।

ডোনাল্ড লু আরও বলেন, আমরা জানি, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক উদ্বেগ কাজ করেছিল। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র অনেক পরিশ্রম করেছিল, কিছু উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। তবে আমরা সামনে তাকাতে চাই এবং পেছনে তাকাতে চাই না। সম্পর্ক দৃঢ় করার উপায় খুঁজে বের করতে চাই আমরা।

তবে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন মনে করেন, নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ কখনো অস্বস্তিতে ছিল না। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, আগেও আমরা অস্বস্তি অনুভব করিনি। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) অনুভব করলে করতে পারে। আমাদের দিক থেকে কখনোই অস্বস্তি ছিল না, এখনও নেই।  

নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নজর

ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশের নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন। ঢাকা সফরের প্রথম দিনেই তিনি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেন।  

বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিবেশ কেমন, নাগরিক সমাজ কোন অবস্থায় কাজ করছে, এসব বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। ডোনাল্ড লু’কে জানানো হয়, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের ক্ষেত্র সামগ্রিকভাবে সংকুচিত হয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে জটিল যেসব ইস্যু

ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে বেশ কয়েকটি জটিল ইস্যু রয়েছে। এসব ইস্যুতে দুই পক্ষই দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা করে আসছে। বিশেষ করে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রম অধিকার, মানবাধিকার, ব্যবসায়িক পরিবেশ সংস্কার, বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরানো ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে এবারও আলোচনা হয়েছে।

কমেছে রাজনৈতিক উত্তাপ

ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফর ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ তৈরি হয়েছিল। সফরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তার কোনো বৈঠক হয়নি। তবে তাকে নিয়ে দুই দলের নেতারা রাজনৈতিক তর্কে জড়ান।  

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সফরের আগে মন্তব্য করেন, লু আসছেন, তাই বিএনপি নেতারা আবার চাঙ্গা হয়ে গেছেন। আবার ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে গেছেন।

পাল্টা বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশে আগমন নিয়ে আমরা কেউ ইন্টারেস্টেড নই। আমাদের ভরসা জনগণের ওপর।

তবে ডোনাল্ড লু’র সফরের পর দুই দলের মধ্যে এ নিয়ে আর তেমন উত্তাপ ছড়ায়নি।

গত ১৪ মে তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন ডোনাল্ড লু। সফর শেষে ১৬ মে তিনি ঢাকা ছাড়েন। ঢাকায় আসার আগে তিনি ভারত ও শ্রীলঙ্কা সফর করেন। চলতি বছর ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডোনাল্ড লু’র এটিই প্রথম ঢাকা সফর।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২৪
টিআর/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।