ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ জুন ২০২৪, ২০ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

পিডিবির লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পঙ্গু মা-ছেলে, বিচার দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৪ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৪
পিডিবির লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পঙ্গু মা-ছেলে, বিচার দাবি

ময়মনসিংহ: নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনতলার ছাদ ঘেঁষে ১১ হাজার ভোল্টের পিডিবির লাইন স্থাপন করায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন মেধাবী শিক্ষার্থী দেবরাজ কর বৃত্ত (১৭) ও তার মা রূপালী কর (৫০)। এ ঘটনায় দায়ীদের বিচারসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।

     

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর ১টার দিকে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান ভুক্তভোগী দেবরাজ কর বৃত্তের বড় ভাই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেবব্রত কর তীর্থ।    

নগরীর নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা দেবরাজ কর বৃত্ত আনন্দ মোহন কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকে পড়েন। তিনি পিএসসি, জেএসসি ও মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কলারশিপপ্রাপ্ত বলে জানা গেছে। তার বাবা কেশব কর বর্তমানে কানাডা প্রবাসী একজন লেখক বলে জানা গেছে।  

সংবাদ সম্মেলনে তীর্থ জানায়, আমার বোন দেবযানী কর প্রাপ্তি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী। গত ১১ এপ্রিল আমিসহ আমার মা রূপালী কর, বোন দেবযানী কর প্রাপ্তি, ছোট ভাই দেবরাজ কর বৃত্তকে নিয়ে ঈদের দাওয়াতে স্বর্ণাদের বাসায় যাই। সেখানে দুপুরে খাওয়ার পর স্বর্ণা, আমার বড় বোন প্রাপ্তি ও ছোট ভাই বৃত্তকে নিয়ে তাদের তিনতলা বাসার ছাদে ছবি তুলতে গেলে পিডিবির ১১ হাজার ভোল্টের বিপদজ্জনক লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় আমার ভাই বৃত্ত। এ সময় তাদের চিৎকারে ছাদে গিয়ে দেখি আমার ভাই গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে আছে। এ সময় বৃত্তকে বাঁচাতে গিয়ে মাসহ আমরা আহত হই। এ ঘটনায় চিকিৎসকরা আমার ভাই দেবরাজ বৃত্তের ডান হাত এবং মা রূপালী করের পায়ের চারটি আঙুল কেটে ফেলেছেন। তারা বর্তমানে পঙ্গু হয়ে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।            

এ ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল কোতোয়ালি মডেল থানায় বাসার মালিক মনিফা বেগম ও তার মেয়ে মারিয়া হক স্বর্ণার নাম উল্লেখসহ পিডিবির অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।      

মামলার বাদী দেবব্রত কর তীর্থের অভিযোগ, বিল্ডিং কোড অমান্য করে নির্মাণ করা বাসার তিনতলার ছাদ ঘেঁষে নিয়মবহির্ভূতভাবে ১১ হাজার ভোল্টের পিডিবির লাইন নির্মাণ করায় এবং বাসার মালিক পক্ষ আমাদের সতর্ক না করে ছাদে নিয়ে যাওয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি।

দুর্ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মামলার আসামি ও বাসার মালিক মনিফা বেগম বলেন, তারা আমাদের বাসায় বেড়াতে এসে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এতে আমাদের দায় আছে বলে মনে করি না। তবে বিদ্যুৎ অফিসের দায় আছে কি-না, আমার জানা নেই।    

জানতে চাইলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (উত্তর) নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ বলেন, বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ করার কারণে ছাদ ঘেঁষে ১১ হাজার ভোল্টের লাইন স্থাপন করা হয়েছিল। তবে অভিযোগ পেয়ে ওই লাইনটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এটি একটি নিছক দুর্ঘটনা। এ নিয়ে মামলা হলে হতেও পারে।    

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. মতিউর রহমান বলেন, ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে। তবে এ ঘটনায় দায়ী কে ? তা এখনই বলা যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।