ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ধাক্কা দিয়ে ছিনতাই, ডিবির হাতে গ্রেপ্তার ৩

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৬ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৪
ধাক্কা দিয়ে ছিনতাই, ডিবির হাতে গ্রেপ্তার ৩

ঢাকা: টাকা বহনকারী ব্যক্তিকে টার্গেট করে নিজ থেকে আচমকা ধাক্কা দিয়ে শুরু করে ঝগড়া। এরপর পাশেই ওত পেতে থাকা সঙ্গীরা এসে মারধর করে লুট করা হয় টাকা।

পুরান ঢাকায় অভিনব পন্থায় দীর্ঘদিন ধরে এইভাবে ছিনতাই চালিয়ে আসা চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মূল পরিকল্পনাকারী খোকন দাস ওরফে বাইল্যা খোকন, মূল অপারেশনাল সংগঠক রেজাউল করিম এবং ভিকটিমের গতিবিধি রেকিকরা দলের কামাল হোসেন।

ডিবি লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালি টিমের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম এবং খুলনায় ধারাবাহিক অভিযানে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (২৯ মে) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান।

তিনি জানান, গত ২৬ এপ্রিল একটি জুয়েলার্সের কর্মচারী মহিউদ্দিন ৭০ লাখ টাকা নিয়ে তাঁতি বাজারের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। বিকেল ৫ টার দিকে ইসলামপুরের নবনারায়ণ লেনের প্রবেশ মুখে পৌঁছামাত্র একজন তাকে ধাক্কা দিয়ে উল্টো অভিযোগ করে ধাক্কা কেন দিলো। টাকা বহনকারী মহিউদ্দিন ক্ষমা চেয়ে চলে যেতে চাইলে আশেপাশে ওত পেতে থাকা ৭-৮ জন ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগে তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে।

এক পর্যায়ে তার চোখে আঙ্গুল দিয়ে গুল লাগিয়ে টাকা ভর্তি ব্যাগটি টেনেহেঁচড়ে ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

২৭ এপ্রিল জুয়েলার্সের মালিক আকিদুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় ডাকাতির মামলা দায়ের করা হয়। এরপর আশপাশের শত শত সিসি ক্যামেরা বিশ্লেষণ, ডিজিটাল এভিডেন্স সংগ্রহ করে থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে।

এক পর্যায়ে থানা পুলিশ এবং ডিবি পুলিশের তদন্তে এই ডাকাতি মামলার পরিকল্পনাকারী ও জড়িতদের নাম-পরিচয় শনাক্ত হয়। তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গত ২৫ মে চট্টগ্রাম এবং খুলনায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ সাড়ে নয় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। ইতোপূর্বে কোতোয়ালি থানা পুলিশ বাবু এবং শাহ আলম নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ডিসি মশিউর বলেন, পুরান ঢাকায় বিভিন্ন পাইকারি এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার লেনদেন করেন। মোটা অংকের টাকা পরিবহনের ক্ষেত্রে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতা নেয়ার নির্দেশনা থাকলেও কাছাকাছি জায়গায় টাকা স্থানান্তর করা হয় বলে তারা পুলিশকে অবগত করেন না।

পুরান ঢাকার এই এলাকাগুলোতে প্রতিদিন শত কোটি টাকার বৈধ লেনদেনের পাশাপাশি অনেকেই হুন্ডির টাকা লেনদেন করে থাকেন। ডাকাত-ছিনতাইকারীরা এই হুন্ডির ব্যবসায়ীদের টাকা সাধারণত টার্গেট করে। কারণ হুন্ডির টাকা লেনদেন করা আইন স্বীকৃত নয়। সে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা অধিকাংশ সময় বিষয়টি পুলিশকে অবগত করে না। কিন্তু ডাকাতদের এই অপতৎপরতায় কখনো কখনো বৈধ ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মুখীন হন।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, এই ডাকাতির মূল মাস্টারমাইন্ড বাইল্যা খোকন। তিনি কোন ব্যবসায়ী কিভাবে টাকা লেনদেন করে এই সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন। অপারেশনাল কমান্ডার রেজাউল করিম একসময় পুরান ঢাকাতেই ব্যবসা করতেন। তারা টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে কিল ঘুষিতে রক্তাক্ত করে চোখে গুল লাগিয়ে ডাকাতি করে আসছিল।

ডাকাতির কাজে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করার জন্য তারা কম দামের বাটন ফোনে নিবন্ধনহীন সিম লাগিয়ে যোগাযোগ করে। ঘটনার পরে মোবাইল এবং সিম ভেঙে নদীতে ফেলে দিয় বিভিন্ন জেলায় পালিয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৪
পিএম/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।