ঢাকা, শনিবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ জুন ২০২৪, ১৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তরা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২৪
ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তরা ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তরা ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন | ছবি: জিএম মুজিবুর

পটুয়াখালী থেকে: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রলয়ঙ্করী আঘাতের পর ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ব্যস্ত ক্ষতিগ্রস্তরা। সরকারি সহায়তা এখনো না পাওয়ায় আবাসস্থল পুনর্নির্মাণের অভাবে এখনও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে অনেক পরিবার।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তীব্র আঘাতে বরগুনা এবং পটুয়াখালী জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘরবাড়ি, ফসল, মাছের ঘের—সবকিছুই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। লাখো মানুষ তাদের আবাসস্থল হারিয়ে বিপর্যস্ত দিন কাটাচ্ছে। তবে এসবকিছুর মধ্যেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও কুয়াকাটাসহ বেশকিছু উপজেলায় রিমালের তাণ্ডব ছিল ভয়ঙ্কর। নদীতীরের হাজারো বাসিন্দার প্রায় সব ঘরবাড়িই রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট অতিজোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। তবুও মানুষগুলো হার না মেনে বরং আবারও শুরু করছেন নতুন জীবনযুদ্ধ।

কলাপাড়ার আব্দুর রব বলেন, ঝড়ে গাছ পড়ে আমার ঘর ভেঙে গিয়েছে। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আমি হাল ছাড়িনি। পরিবার নিয়ে আবার শুরু করতে হবে, এছাড়া তো উপায় নেই। টাকা-পয়সা নেই, তবু ধার-দেনা করে হলেও জীবন তো চালাতে হবে।

মোছা. রাশিদা খাতুন বলেন, আমাদের ঘরবাড়ি সব ভেঙে গেছে। এখন কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাদের দ্রুত সাহায্য করুন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাদের জীবিকা নির্বাহের উপায়ও চলে গেছে। খাবার, পানি ও ওষুধের তীব্র অভাবও রয়েছে এ এলাকায়।



কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল হাওলাদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার কাজ উদ্বোধন করেছেন। এখন দুই-এক দিনের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত সবার কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো হবে।

বরগুনাতেও দেখা গেছে একই চিত্র। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি চলছে পুনর্বাসনের কাজও। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার জিনতলা, হরিণঘাটা ও পদ্মা; তালতলীর শুভসন্ধ্যা, তেঁতুলবাড়িয়া ও জয়ালভাঙ্গা এবং সদর উপজেলার বালিয়াতলী, তেতুলবাড়িয়া ও খাজুরতলাসহ সব নদীপাড়ের মানুষেরা এখনও চরম দুর্ভোগে। বেরিবাঁধ ভেঙে পানির তোড়ে ভেসে গেছে তাদের সহায়-সম্পদ, বসতঘর।

ঘরবাড়িকে বাসযোগ্য করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারাও। তবে, তাদের দাবি, টেকসই বেড়িবাঁধ। চাল, ডাল, তেলসহ খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন এ উপকূলের দুর্গতরাও।

বরগুনা জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম জানান, জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে। ২৫ লাখ টাকা নগদ সহায়তা এবং ১০ লাখ টাকার শিশুখাদ্য ও ৮ লাখ টাকার গোখাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরও কিছু বরাদ্দ পাওয়া গেছে, সেটা উপজেলাগুলোতে ভাগ করে দেওয়া হবে। আরও সহায়তা দিতে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে পাঠানো হচ্ছে মন্ত্রণালয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২৪
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ