ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘ধনী ও অবৈধ টাকার মালিকদের রক্ষার বাজেট’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৪
‘ধনী ও অবৈধ টাকার মালিকদের রক্ষার বাজেট’

ঢাকা: আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ধনী ও অবৈধ টাকার মালিকদের রক্ষার বাজেট বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন।

 বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এক যৌথ বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন পোশাকশ্রমিক সংগঠনটির নেতারা।

গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতারা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ২০২৪-২৫ সালে সরকারের ঘোষিত ৫৩তম বাজেট ‘সুখী সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে অঙ্গীকার’ করেছে। কিন্তু এই সুখের ভাগিদার পোশাকশ্রমিকসহ শ্রমজীবী মেহনতি ও নিম্ন আয়ের মানুষের সুযোগ থাকবে না।

তারা বলেন, ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটে প্রশ্নাতীত ছাড় অবৈধ সম্পদের মালিক ব্যক্তি-গোষ্ঠী-প্রতিষ্ঠান ও পাচারকারীদের দিয়েছে প্রস্তাবিত বাজেট। সাধারণভাবে বৈধ আয়কারীদের সর্বোচ্চ কর ২৫% থেকে বাড়িয়ে ৩০% করা হয়েছে। অন্যদিকে অবৈধ সম্পদ বা কালো টাকা সাদা করতে কর প্রস্তাব করা হয়েছে মাত্র ১৫%। ফলে নিয়মিত বৈধ সৎ করদাতাদের ওপর চাপ বাড়বে।

অবৈধ সম্পদের মালিক ও গোষ্ঠী এই সরকারের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠছে এবং তাদের রক্ষা করার জন্যই এই সমস্ত আয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন শ্রমিক নেতারা।

২০২৪-২৫ এর বাজেট ‘অবৈধ সম্পদ আহরণকারী তোষণ ও রক্ষার’ বাজেট হিসাবে স্পষ্ট হয়েছে। এই বাজেট জনগণের স্বস্তির নয় বরং অবৈধ সম্পদ আহরণকারীদের স্বস্তি ও দায়মুক্তির পথ প্রশস্ত করেছে, বলেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতৃত্ব।

নেতৃত্ব আরও বলেন, রপ্তানি আয়ের শীর্ষ খাতের কারিগর পোশাকশ্রমিকসহ শ্রমজীবীদের জীবনযাত্রায় স্বস্তি আনতে কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ দেখা যায়নি বাজেটে। মূল্যস্ফীতির নিষ্ঠুরতা থেকে মুক্তি দিতে পোশাকশ্রমিক ও শ্রমজীবীদের জন্য রেশনিং ও শ্রমখাতে বরাদ্দ দাবি শ্রমিক সংগঠন থেকে উঠলেও, সেটি এই বাজেটে লক্ষ্য করা যায়নি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কৌশলে দ্রব্যমূল্যর দাম বাড়ানো ও কমানো হয়েছে। এই কৌশলে ভোগান্তির শিকার হবে সাধারণ মানুষ। এলপিজি গ্যাস ও সিএনজি গ্যাসের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের খাদ্য খরচ বাড়বে, বাড়বে পরিবহন খরচও। এছাড়া চিকিৎসা সরঞ্জামের আমদানি মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ শ্রমজীবীরা চিকিৎসার সুযোগ থেকে আরেও দূরে সরবে। একদিকে শ্রমজীবীদের জন্য প্রয়োজনীয় হাসপাতাল ও কমমূল্যে মানসম্মত চিকিৎসার সুযোগ নেই, তার ওপর চিকিৎসা সরঞ্জামের দাম বাড়লে তার প্রভাবে শ্রমিকদের চিকিৎসা  বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলবে।

তারা আরেও বলেন, সামাজিক সুরক্ষা খাত থেকে পোশাকশ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষের সুবিধা বৃদ্ধির দাবি করলেও এবারও তার কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। এ যাবত যে ১ কোটি ফ্যামেলি কার্ড যে বিতরণ করা হয়েছে, তা কাকে করা হয় জনগণের কাছে কোনো সুস্পষ্ট হিসাব নাই। যত দূর জানা যায়, ফ্যামিলি কার্ড  ক্ষমতাসীন সরকারের দলীয় আয়োজনে বণ্টন করা হয়। এবারের বাজেটে খুব সামান্য ফ্যামিলি কার্ড বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও এখনো তা স্পষ্ট না। আগামীতে সামজিক সুরাক্ষা খাতে পোশাকশ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষরা রেশন, চিকিৎসা, আবাসন ও কম মূল্যে সকল নিয়মিত দ্রব্য কিনতে পারবেন কি না সেটি বাজেটে ধোঁয়াশা আছে। কৌশলে দ্রব্যমূল্যর দাম কমানো-বাড়ানো হয়েছে, যাতে শেষ পর্যন্ত শ্রমজীবী মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশঙ্কাই সামনে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।