ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাবাকে ডাকাতের গুলি, পথে হৃদরোগে ছেলের মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৪
বাবাকে ডাকাতের গুলি, পথে হৃদরোগে  ছেলের মৃত্যু

কুমিল্লা: জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার সরসপুর ইউনিয়নের বাতাবাড়িয়া গ্রামে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় আবদুল মালেক (৭০) নামে এক বৃদ্ধের পেটে গুলি চালায় ডাকাতরা। এ ঘটনার পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা।

খবর পেয়ে ঘুম থেকে উঠে হাসপাতালের পথে যাচ্ছিলেন ছেলে ওমর ফারুক (৪০)। পথিমধ্যে রিকশা উল্টে গেলে হৃদ্‌ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি।  

শুক্রবার (১৪ জুন) মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আবু মোহাম্মদ শাহজাহান কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। তদন্তে আমরা এ ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। ঘটনাটি মনোহরগঞ্জ এবং চাটখিল থানার সীমান্তবর্তী হওয়ায় উভয় থানার পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।  

তিনি আরও জানান, গুলি ও ডাকাতির ঘটনার সময় চারজন ডাকাত উপস্থিত ছিল। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আবদুল মালেকের ভাতিজা মো. শাহাদাত হোসেন অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল মালেক একজন চা দোকানি। বাতাবাড়িয়া গ্রামে নিজ বাড়ির সামনেই তার চায়ের দোকান। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও আব্দুল মালেক ফজরের নামাজ শেষে দোকান খুলে বসেন। একটু পরেই তার স্ত্রী শহিদা বেগম আসেন চা খেতে। এরই মধ্যে দুটি মোটরসাইকেলযোগে চারজন ডাকাত ক্রেতা সেজে দোকানে প্রবেশ করে। এ সময় আব্দুল মালেকের কাছে সিগারেট চান তারা। মালেক তাদেরকে সিগারেট দিতে দিতেই ডাকাতরা পিস্তল বের করে তার স্ত্রী শহিদা বেগমের গলায় থাকা সোনার চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নেয়।  

এক পর্যায়ে মালেক তাদের বাধা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ডাকাত সদস্যরা তাকে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে আবদুল মালেকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে নাথেরপেটুয়া থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।  

এ সময় বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন ছেলে ওমর ফারুক। পরে খবর পেয়ে রিকশাযোগে হাসপাতালে রওয়ানা দেন। বাড়ির কাছাকাছি ঈদগাহের কাছে এলে গর্তে পড়ে তার রিকশাটি উল্টে যায়। এ সময় হৃদ্‌ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

ওমর ফারুকের মা শহিদা বেগম বলেন, আমার ছেলেটিও মারা গেল। তার রেখে যাওয়া তিনটি ছেলে এক মেয়ে এখন কাকে বাবা বলে ডাকবে? আর আমিও কি নিয়ে বাঁচব?  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।