ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ জুন ২০২৪, ২০ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা

অস্থায়ী সংবাদদাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৪
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা

সুনামগঞ্জ: ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বাড়ায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।  

মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার এ তথ্য জানান।

তিনি আরও জানান, সুনামগঞ্জের ষোলগড় পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সুরমা নদীর পানির গতি বেশি ছিল। এছাড়া ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ও তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর পানির গতি আগের চেয়ে কমেছে। রাত ১১টার পর থেকে বৃষ্টিপাত বাড়বে। সেইসঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হু হু করে পানি বাড়ায় জেলার পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক, দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে। জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় পানি বাড়ায় বেলডুল, অনন্তপুর, ফহেতপুর, রাধানগর, দরেরপাড়, পেয়ারী নগর, পদ্ম নগর, ভাটিপাড়া, ললিয়ারপুর, কৈয়ারকান্দা, বাঘমারা, দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের ৮ শতাধিক অসহায় পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছে। জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, মধ্যনগর, ধর্মপাশা, দিরাই, শাল্লা, ছাতক, দোয়ারাবাজারসহ নিম্নঞ্চলের বসতবাড়ি, দোকান, চলাচলের সড়ক, মসজিদ, মন্দির পানিতে ডুবে গেছে। বসতবাড়ি ও দোকানের মালামাল রক্ষায় উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় আছে নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষজন।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা শাকিল আহমেদ জানান, ঢলের পানি ভাটির দিকে প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় হু হু করে বাড়ছে পানি। যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এতে ২০২২ সালের বন্যার মতোই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে হাজার হাজার মানুষ বন্যার আতঙ্কে উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় রয়েছে।  

শক্তিয়ারখলা গ্রামের বাসিন্দা জহির আহমেদ জানান, শক্তিয়ারখলা-বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ ও শক্তিয়ারখলা, তাহিরপুর উপজেলা সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তাহিরপুর, মধ্যনগর, ধর্মপাশা উপজেলার মানুষের জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বিকল্প পথে নৌকায় চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তারা।  

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা শফিউল আলম বলেন, পানি বেড়ে ঘরের ভেতর চলে এসেছে। আমাদের গ্রামসহ আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের খোঁজে চলে গেছে। আমিও নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছি।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমান জানান, পানি বাড়ায় উপজেলার ২২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮০০ মানুষ অবস্থান করছেন। দিনভর বন্যাকবলিত মানুষদের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হয়।  

তিনি আরও জানান, বিকেলে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাদিক, জেলার প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাতেরটেক, পিয়ারীনগর, সরকারি মডেল স্কুলসহ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, বন্যা পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৪
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।