ঢাকা, শনিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

১৮ বছরে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মামলার প্রতিবেদন দিয়েছে ডিএনএ ল্যাব

স্টাফ করেপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৫ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৪
১৮ বছরে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মামলার প্রতিবেদন দিয়েছে ডিএনএ ল্যাব

ঢাকা: ২০০৬ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত গত ১৮ বছরে ৮ হাজার ৯১৭টি মামলার প্রেক্ষিতে ৩১ হাজার ৪৪৫টি ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা পরীক্ষা করেছে ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি (এনএফডিপিএল)। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬৬২টি মামলার প্রতিবেদন সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রদান করেছে ডিএনএর ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন এই ল্যাব।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) ‌'ডিএনএ ফরেনসিক সাইন্স: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত' শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য জানান ডিএনএর ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. এ. এম পারভেজ রহিম। ডিএনএ দিবস-২০২৪ উপলক্ষে জাতীয় মহিলা সংস্থার সেমিনার রুমে এই সেমিনারের আয়োজন করে ডিএনএর ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. এ. এম পারভেজ রহিম। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি (এনএফডিপিএল) বাংলাদেশের প্রথম ডিএনএ ল্যাব। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের অধীন এই ল্যাবটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউক্লিয়ার মেডিসিন ভবনে গত ২০০৬ সাল থেকে এই ল্যাবের কার্যক্রম চলছে।

তিনি আরো বলেন, হত্যা বা ধর্ষণের মতো সহিংস অপরাধ দমনে, পিতৃত্ব ও মাতৃত্ব নির্ণয়ে অথবা মৃত ব্যক্তির পরিচয় উদ্ধারে কিংবা কিডনিদাতা-গ্রহীতার মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয়ে এই প্রযুক্তি অব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। দোষী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা অথবা মিথ্যা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি মামলার প্রাথমিক পর্যায় থেকে বিচার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে এবং বিচারোত্তর সত্য উৎঘাটনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

তিনি আরো জানান, ডিএনএ পরীক্ষার সুবিধা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে ৮টি বিভাগীয় শহরের ৮টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। যেখান থেকে স্ক্রিনিং করার আলামত অথবা নমুনা পরবর্তী পরীক্ষার জন্য এনএফডিপিএল-এ পাঠানো হয়।

তবে গুরুত্বপূর্ণ এই ল্যাব ও অধিদপ্তরের জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে বলেও জানান ডা. এ. এম পারভেজ রহিম। তিনি বলেন, বর্তমানে জাতীয় মহিলা সংস্থার ভবনে ৩টি রুম ভাড়া নিয়ে ডিএনএ অধিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন মামলার আলামতসহ ডিএনএ ল্যাবে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ নমুনা জমা হচ্ছে, যা রাখার পর্যাপ্ত স্থান নেই। স্থায়ী অফিসের সংস্থান না হলে সার্বিক কার্যক্রম ব্যহত হবে। বর্তমানে ডিএনএ ল্যাবের আদায়কৃত ইউজার ফি বণ্টনের নীতিমালা নেই। সরকারি হাসপাতালের ন্যায় বণ্টনের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন আবশ্যক। ডিএনএ প্রোফাইলিং একটি উচ্চ প্রযুক্তির বিষয়। তাই কর্মরত জনবলের দক্ষতা উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট নিড বেইজড বৈদেশিক প্রশিক্ষণ আবশ্যক। এছাড়া সারাদেশে অনেক অবৈধ ডিএনএ ল্যাবরেটরি পরিচালিত হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতীয় ডিএনএ নীতিমালা প্রণয়ন আবশ্যক।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি। তিনি বলেন, ডিএনএ পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে যে শুধু অপরাধী শনাক্ত বা নিরাপরাধ মানুষ মুক্তি পায় তাই নয়, বিজ্ঞান যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে ভবিষ্যতে মানুষের রোগ-ব্যাধি নির্ণয়ে ডিএনএ পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরো বলেন, ডিএনএ ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কিছু চাহিদা রয়েছে। তাদের সেই চাহিদার সঙ্গে আমরা একমত। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তাদের এই চাহিদাগুলো খুবই যুক্তিযুক্ত। আশা করছি জনবল নিয়োগসহ তাদের যেসব চাহিদা রয়েছে সেগুলো অতি দ্রুত পূরণ হবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেকের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শাহানা শারমিন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, বাংলাদেশ শিশু একাডেনির মহাপরিচালক আনজীর লিটন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৪
এসসি/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।