ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দুই মন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান সর্বকনিষ্ঠ এমপির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২৪
দুই মন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান সর্বকনিষ্ঠ এমপির

যশোর: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘাতে হতাহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আজিজুল ইসলাম। তিনি যশোর-৬ (কেশবপুর) আসন থেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত দেশের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য।

শিক্ষার্থীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত আলোচনার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) কে এম আজিজ নামে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনের কষ্ট দূর করতে এই মুহূর্তে করণীয় কী?’ শিরোনামে একটি পোস্ট দিয়ে এ আহ্বান জানান এমপি।

আজিজুল ইসলামের ফেসবুকে পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘যেভাবে চলছে, তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লেগে যাওয়ার কথা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার কোনো সলিউশন হতে পারে না। আমি মনে করি, যেসব শিক্ষার্থীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নাই, তাঁদের গ্রেপ্তার করাটা অযৌক্তিক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চাইলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধরপাকড় করাটা মোটেও সুখকর হবে না। এই মুহূর্তে সরকারের উচিত যেসব সাধারণ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁদের নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসি, শিক্ষামন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, অভিভাবক, আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক ও জাতীয় অধ্যাপকদের নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিস্থিতি ফেরাতে একটা সর্বজনীন ডায়ালগের ব্যবস্থা করা।

শিক্ষার্থীদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রশমিত করতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখানোই হবে সময়ের সেরা সিদ্ধান্ত। একটা পক্ষ তো চাচ্ছেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাঁধে বন্দুক রেখে সরকার পতন করতে। দুষ্কৃতকারীদের সেই সুযোগও নষ্ট হবে এ রকম কিছু করলে। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় যে দুজন লোকের ওপর শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ, সেই ওবায়দুল কাদের সাহেব এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এখনো শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে দেখলাম না। অবশ্যই শিক্ষার্থীদের কাছে তাঁদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। এতোগুলো তাজা প্রাণ চলে গেছে। দায়িত্বশীলরা শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইলে দোষের কিছু দেখি না। দায়িত্বশীলদের দায়িত্বও যেমন নিতে হয়, তেমনিভাবে দায়ও নিতে হয়। একটা দেশ এরকম অচলাবস্থায় থাকতে পারে না। দেশ ও দশের মঙ্গলের জন্য রাষ্ট্রকেই এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনের ক্ষোভ প্রশমনে কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। বিষয়টি যেহেতু কোন রাজনৈতিক দলের নয় সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয়দের এখানে যথাযথ ভূমিকা রাখা উচিৎ। আর শিক্ষার্থীদের দিক যদি আমাদের ভিসিরা দেখতে ব্যর্থ হন আমি মনে করি না তাদের ঐ পদে থাকার কোন নৈতিক অধিকার আছে। দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষরা শান্তি চায়। আর কোন হানাহানি দেখতে চায় না। গত ২-৩ সপ্তাহে দেশ যতটুকু পিছিয়ে গেছে আর পিছিয়ে যাবার সুযোগ নেই। সকলের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। দেশে শান্তি ফিরে আসুক। ’

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম জানতে চাইলে সংসদ সদস্য আজিজুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের মৃত্যু তাকে ব্যথিত করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রীর কথায় যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই দায়ভার তাদের। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাওয়া উচিত। সব শিক্ষার্থীকে জামায়াত-শিবির বানিয়ে দেওয়া ঠিক না বলেও তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি কথাগুলো বলবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২৪
ইউজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।