ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সীমান্তে আর পিঠ দেখাবেন না, বিজিবিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৪
সীমান্তে আর পিঠ দেখাবেন না, বিজিবিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্তে আর পিঠ দেখাবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, সীমান্তে আমাদের মানুষ মারে আর বিজিবি পতাকা বৈঠক করতে বাধ্য হয়।

বলে দিয়েছি, আর পিঠ দেখাবেন না।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাহিনীর সদস্যদের খোঁজ-খবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এই ফোর্সগুলোকে (বাহিনী) ১৫ বছরে দানব বানিয়েছে; যারা বানিয়েছে, তাদের আমি পারি আর না পারি, তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে দাঁড় করাবো। তারা কত লোক মেরেছে, প্রত্যেকটি ইনস্টিটিউশন ধ্বংস করেছে। বিজিবির মতো একটা ফোর্সকে সীমান্তে পিঠ দেখাতে বলেছে।  

‘বর্ডারে আমাদের লোক মারে, বিজিবি পতাকা বৈঠক করতে বাধ্য হয়। আমি এখানে বলেছি, যতদূর আমার বলার আছে, পিঠ দেখাবেন না, এনাফ ইজ এনাফ (যথেষ্ট হয়েছে)। আমাদের সীমান্তের মধ্যে ঢুকে মারে, আমরা বলি আমরা পতাকা বৈঠক করেছি, সব ঠিক হয়ে গেছে বা আমি জানি না। সেসব দিন শেষ হয়ে গেছে। ’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিগত সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এই বাহিনীগুলোকে দানব বানিয়েছে—পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, বিজিবি। ভাগ্য ভালো আমাদের সেনাবাহিনী এ থেকে রক্ষা পেয়েছে। এগুলো জাতীয় বাহিনী। কারও ব্যক্তিগত বাহিনী নয়। আমি হয়তো এরপর আপনাদের সঙ্গে এত কথা বলবো না। আমি তাদের বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা চালিয়ে যাব। দেশে এবং দেশের বাইরে, সে যত বড়ই হোক। আমার হাতে পড়লে তাদের একদম জেলে দিয়ে দেব। আমরা এরই মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি তাদের বিরুদ্ধে, যারা পুলিশকে দানব বানিয়েছে।

সাখাওয়াত হোসেন আওয়ামী লীগের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, এই দল ফ্যাসিস্টের চেয়েও নিকৃষ্ট। ফ্যাসিস্টরা যা করেছে, তারা সেটাই করেছে, প্রোপাগান্ডা.. আর যারা সীমান্ত রক্ষার কথা, তাদের বলে পিঠ দেখাও। আর নয়। ইনশাল্লাহ এমন আর হতে দেওয়া হবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সব কিছুর একটা প্রসেস আছে। আমি লিস্ট করছি। যাদের অন্যায়ভাবে বের করা হয়েছে, আবার যারা এরমধ্যেই ছিল না, আপনারা যাদের কথা বলছেন সেটা আমরা দেখব। তবে আমরা খুঁজছি, বের করার চেষ্টা করছি হুকুমের আসামিদের।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, যাদের কথা বলা হচ্ছে, তাদের সবার লিস্ট আমাদের কাছে আছে। ২/১ দিনের মধ্যে আপনারা অ্যাকশন দেখবেন। আমি তো এটার মালিক না। চাইলেই সাইন করতে পারি না। দুটো ধাপ পার হতে হবে। আজ বা কালকের মধ্যে আপনারা খবর জেনে যাবেন। মাঠের কাজ প্রায় শেষ। আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আমি যতদিন আছি, এই অপরাধীদের আদালতে দাঁড় করাবো।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সোমবার নিজের এক বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অনেক কথার মধ্যে অনেক কথা চলে আসে। যদি আমি এমন কোনো কথা বলে থাকি, সেটা ভুল বুঝেছেন, সেটার জন্য আমি দুঃখিত।

১৫ আগস্ট নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা এখনই আমি বলতে পারব না। আজকে আমরা বিকেলে বসব, সেখানে আলোচনা হবে। যেটাই হয় আমরা নির্ধারণ করব, সেদিন প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। কেউ যাতে কোনো ধরনের গন্ডগোল করতে না পারে।

পুলিশের যোগদান সম্পর্কে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সবাই যোগ দিচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার বলতে পারব কয়জন এসেছে, কয়জন আসেনি। আর আপনারা তো দেখছেন পুলিশ আমার সঙ্গে আছে।

ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের আন্দোলন কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। এই আন্দোলনের তো ইমেজ আছে। আর পুলিশ তো অনুতপ্ত। আমি তোমাদের কয়জনকে দাওয়াত করি, আমরা একসঙ্গে বসে পুলিশের সঙ্গে দুপুরে খাব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৪
এজেডএস/এসজেএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।