ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্লাবিত লক্ষ্মীপুরের উপকূল, ভোগান্তি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৪
প্লাবিত লক্ষ্মীপুরের উপকূল, ভোগান্তি

লক্ষ্মীপুর: পূর্ণিমার প্রভাবে মেঘনায় স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় গত তিনদিন ধরে নদীর উপকূলীয় এলাকাগুলো প্লাবিত হচ্ছে।

জোয়ারের পানি উঠে তলিয়ে যাচ্ছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর এবং রামগতি উপজেলার নদী সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকা।

কয়েক ঘণ্টা পর পানি নেমে গেলেও উপকূলীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি থেকে যায়।

স্থানীয়রা জানায়, বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে। এর আগেও গত সোম ও মঙ্গলবার (১৯ ও ২০ আগস্ট) উপকূলীয় এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

একই সঙ্গে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে বসতবাড়ি, মাছ চাষের পুকুর, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাটে পানি উঠে গেছে। পানিবন্দি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে অনেকে। জেলার বিভিন্নস্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষক ও মাছচাষিরা।  

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলা দুটি মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত। নদীতে জোয়ারের পানি বাড়লে উপকূলে উঠে আসে। বর্ষা মৌসুমের প্রতি অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার সময়ে পানি বৃদ্ধি পায়। তখন লোকালয় প্লাবিত হয়। কারও কারও ঘরে ভেতরে পানি ঢুকে পড়ে।

কমলনগরের চর মার্টিন এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, জোয়ারের পানিতে তাদের এলাকা তলিয়ে গেছে। সড়কের ওপর দিয়ে পানি গড়াচ্ছে। এতে লোকজনের বসতবাড়ি, পুকুর ও ফসলের জমিতে পানি ঢুকে পড়ে। ক্ষেতে থাকা রোপা আমন নষ্ট হয়ে যায়। পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়ে অনেকে। আর চুলোয় পানি ঢুকে পড়ায় রান্না-বান্নার কাজ ব্যাহত হয়।

তিনি জানান, জোয়ারের তোড়ে গ্রামীণ পাকা ও কাঁচা রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কোথাও কোথাও রাস্তা ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

স্থানীয় স্কুলশিক্ষক সানা উল্যা বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে নদীতে জোয়ারের পানি বেড়েছে। সেই সঙ্গে টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে পানির উচ্চতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টির কারণে মাঠ-ঘাট, খাল-বিল থই থই করছে। এরই মধ্যে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ার কারণে বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। একদিকে বৃষ্টির পানি, অন্যদিকে জোয়ারের পানির কারণে উপকূলীয় এলাকায় চরম দুর্বিষহ অবস্থা বিরাজ করছে।

তিনি জানান, খাল-বিল ভরাট এবং অবৈধ দখলদারের কবলে পড়ায় পানি নামতে পারছে না। অনেক এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এবার সবজি এবং রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে মেঘনায় পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে এক মিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। মেঘনার তীররক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। বাঁধ নির্মাণ হলেই জোয়ারের পানির কবল থেকে উপকূলীয় এলাকা রক্ষা পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।