চাঁপাইনবাবগঞ্জ: একদিকে ভাঙন, অন্যদিকে ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। এ নিয়ে চরম দুর্ভোগে পদ্মার চরের পাঁচ গ্রামের প্রায় দেড় হাজার পরিবার।
পদ্মানদীতে তীব্র স্রোতের কারণে পল্লীবিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাওয়ায় ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে গ্রামগুলো। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত বাবুপুর-সাত্তার মোড়ে। পদ্মা পাড়ের সেতারাপাড়া, লক্ষ্মীপুরচর, নিশিপাড়া কদমতলা ও বগলারচর গ্রামের প্রায় দেড় হাজার বাসিন্দা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, খুঁটি পড়ে যাওয়ার খবর পেয়েই কানসাট পল্লীবিদ্যুতের কর্মকর্তাদের জানানো হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেননি তারা। এতে গত ১০ দিন ধরে অন্ধকারে দিন কাটাতে হচ্ছে।
নিশিপাড়া গ্রামের মুদি দোকানদার বিকল আলী জানান, এমনিতেই তারা ভাঙন আতঙ্কে আছেন। তার ওপরে গত ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় তার দোকানের ফ্রিজে রাখা বিভিন্ন পণ্য বিশেষ করে পদ্মার মাছের জন্য জমিয়ে রাখা বরফ গলে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মাছ ও মাংস ছিল, সেগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে।
কদমতলা গ্রামের কৃষক মজিবুর রহমান বলেন, জলবায়ুর কারণে চরে এমনিতেই গরম বেশি। তার ওপরে গত ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হচ্ছে না। প্রশাসনকে বলেও লাভ হচ্ছে না। টিনের ঘরে এখন গরমে অতিষ্ঠ সবাই।
জেলা শহরের শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজের শিক্ষার্থী শাহলাল হোসেন (২০) বলেন, এমনিতেই ভাঙন আতঙ্কে রাত জেগে থাকি। দুদিন পরপর বাড়ি সরাতে হয়। তার ওপরে চরের মানুষের জন্য কেউ নাই। আমার মত শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করতে পারছে না। দিনে পরিবারকে সহায়তা করে আমরা রাতে একটু পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু সেটাও সম্ভব হচ্ছে না।
পাকা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, ১০ দিন আগে পদ্মানদীর তীরের সাত্তার মোড়ে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি নদীতে পড়ে যায়। ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানোর পরও মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তীব্র গরমে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। দোকান ও বাসাবাড়ির ফ্রিজের খাবারও নষ্ট হয়ে গেছে। আর শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া তো বন্ধই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটিটি পুনঃস্থাপন করা যাচ্ছে না। নদীতে পানি কমলে দ্রুত সমাধান করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪
এসআই