টাঙ্গাইল: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দুইটি রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াতে ইসলাম। একটি হচ্ছে সংস্কারের জন্য, সেই রোডম্যাপে নির্দিষ্ট হতে হবে কি কি বিষয়ে সংস্কার হবে এবং কতদিনের মধ্যে সংস্কার হবে।
এমনটিই জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শরীফুর রহমান।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টায় নিহত সেনা কর্মকর্তা তানজিম সারোয়ার নির্জনের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে গিয়ে তার পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার পর একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা কোনো ব্যর্থ নির্বাচন চাচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি একটা সফল এবং একটি ক্রেডিবল নির্বাচন। সেই দিক দিয়ে আমরা দুটি রোডম্যাপের দাবি জানাচ্ছি।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, যে ডাকাতদল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা এক মাস আগে জামিনে বের হয়েছে। এরপর তারা বিশাল একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। এরকম আরও অনেকেই জেল থেকে জামিন পেয়েছেন। সরকারকে এগুলো দেখতে হবে।
তিনি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন. তিনি দেশ থেকে চলে গেছেন, অনেকে বলে পালিয়ে গেছেন, আসলে পালিয়ে যাওয়া কোনো ভালো কাজ না, আমি বলি যে উনি চলে গেছেন। উনি চলে যাওয়ার পর আবার মাঝে মাঝে শুনি যে উনি ঢুকবেন, আমি মনে করি চলে গিয়ে ভালোই করেছেন কারণ দেশের মানুষ তাকে ভালোবাসে না। যেহেতু দেশের মানুষ ভালোবাসে না সেহেতু জোর করে আবার ক্ষমতায় বসা বুদ্ধিমতির কাজ হবে বলে মনে করিনা। তিনি গিয়েছেন জাতি মুক্ত হয়েছে, জাতিকে শান্তিতে থাকতে দিন।
তিনি আরও বলেন, যদি শেখ হাসিনা অপরাধী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
শরিফুর রহমান বলেন, দেশের জন্য জীবন দেওয়ার সৌভাগ্য সবার হয় না। তিনি সেনাবাহিনীতে যেনে শুনেই গিয়েছিলেন। এটা জীবন মৃত্যুর খেলা এবং দেশ রক্ষার খেলা। আল্লাহ তার মা-বাবাকে এরকম একটা সন্তান দিয়ে ধন্য করেছেন। আমরা এখানে ওনাদের গর্বিত করতে আসিনি, এসেছি আমরা গর্বিত হতে।
তিনি বলেন, এরকম বাবার কপালে চুমু দেওয়া আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমরা মনে করি এটা আমাদের জাতীয় নাগরিক দায়িত্ব, তাদের প্রতি সম্মান দেখানো। এলাকার মানুষকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের সবার প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা নির্জনের বাবা-মা দেখে রাখবেন। আপনারা তাদের খোঁজ-খবর নেবেন, আমরাও যতটুকু পারি পাশে থাকবো।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তিনি আমেরিকায় গিয়ে বলেছেন, এই আন্দোলন ছিল একেবাবেই পরিকল্পিত। আমি ওনার বক্তব্যের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করবো না। আমি আমার নিজস্ব মূল্যায়নটা শুধু বলবো। সবার প্রতি আমার সম্মান আছে। আমার জানামতে এই আন্দোলন ছিল ছাত্রদের অধিকারের ব্যাপার। অন্য কিছু না।
নির্জনের পরিবারের সঙ্গে তিনি দীর্ঘসময় কথা বলেন। পরে তার বাবা ছারওয়ার জাহান দেলোয়ার, মা শাহনাজ খান ও বড় বোন তাসনুভা সারোয়ার সূচিকে সঙ্গে নিয়ে দোয়া করেন।
এ সময় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, জেলা সেক্রেটারি হুমায়ুন কবীর, জেলা সহকারী সেক্রেটারি হোসনী মোবারক বাবুলসহ দলের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার দিবাগত রাতে দায়িত্ব পালনকালে চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জন (২৩) নিহত হন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
আরএ