পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের জেমজুট কারখানা চালুসহ শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে পঞ্চগড়ে জেমজুট কারখানার শ্রমিকরা। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, কারখানার কাঁচামালের সংকট থাকায় এবং চলমান পরিস্থিতিতে নানা সমস্যায় পড়ায় কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। তবে শ্রমিকরা বলছেন কোনো কিছু অবগত না করেই কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে বিপাকে পড়ে যাওয়ায় তারা সড়কে নেমেছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের মুনিরাম জোত এলাকার জেমজুট বাজারে কারখানাটির সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
কারখানাটির শ্রমিক কাশেম আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের (শ্রমিক) কোনো কিছু অবগত না করে হঠাৎ কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি অবগত হয়ে কারখানা চালুর দাবিতে ও মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আমরা সড়কে নেমেছি। দাবি মানা না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, শ্রমিকদের অবগত না করেই কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এতে কয়েক হাজার শ্রমিক বিপাকে পড়ে গেছে। তাই সবাই বিক্ষোভ অবরোধ কর্মসূচি করছে। এদিকে ৮ ঘন্টা কাজের পারিশ্রমিক ১৯০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি করাসহ শুক্রবার ছুটির দাবি জানানো হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রাস্তার ওপর অবস্থান নেওয়ায় দুই পাশে প্রায় শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে রাতেই সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি আনার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কারখানা কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় আন্দোলন ও অবরোধে প্রত্যাহার করে নেয় শ্রমিকরা।
অবরোধের বিষয়ে কথা হয় পঞ্চগড় জেমজুট লিমিটেডের ম্যানেজার এবং প্রধান মানবসম্পদ ও প্রশাসন হিমেল প্রামাণিকের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কাঁচামালের সংকটসহ দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে ও হঠাৎ করে পাটের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা আমরা আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়ি, এ কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কার্যক্রম বন্ধ রাখি। এর কারণে যেহেতু শ্রমিকরা রাস্তায় নেমেছে, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবগত করে দ্রুত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দ্রুত কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে জেলার বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার নজির বাংলানিউজকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। শ্রমিকরা যে দাবি উপস্থাপন করেছে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। আশা করি সব সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
আরএ