পঞ্চগড়: পঞ্চগড় সদরে একটি সেতুর সংযোগ পয়েন্ট ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে রাস্তার উভয় পাশের ৫০ গ্রামের বাসিন্দারা। রাস্তাটি সংস্কার না করায় ঝুঁকিতে পড়েছে সুইচ গেট সেতুসহ পাশে থাকা একটি বাজার।
সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের কুচিয়ামোড় এলাকার সুইচ গেট সেতু এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বার বার কর্তৃপক্ষকে অবগত করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না তারা। এদিকে সেই ভাঙনের পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছে স্থানীয়রা সহ রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াতকারীরা।
স্থানীয়রা বলছেন, পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৪ নম্বর কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়ন ও বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের একটি গ্রামসহ আশপাশের প্রায় ৫০টি গ্রামের বাসিন্দা এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। দ্রুত শহরে যাওয়ার একমাত্র ভরসা এই সেতু। গত চার মাস ধরে সেতুর সংযোগ পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাস্তাসহ সেতুটি নদীতে বিলীন হওয়ার অবস্থা দেখা দিয়েছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধানসহ সংস্কার করা না হলে দুর্ভোগ কয়েকগুণ হাড়ে বেড়ে যাবে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ও কুচিয়ামোড়-তালমাচ্ছপাড়া উপ প্রকল্পের আওতায় পানি সংরক্ষণে ২০০৪ সালে নির্মাণ হয় এই সুইচ গেটটি।
স্থানীয় বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এবারের প্রথম বর্ষাতে এই ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্তমানে রাস্তার ওপর ৫ থেকে ৬ ফিট রাস্তা বাকি রয়েছে। এখন যদি এটুকুও ভেঙে যায় তাহলে কোনো ভ্যানও যেতে পারবে না। একই সঙ্গে সেতুর পশ্চিম পাশের মার্কেটের পাঁচটি দোকান ঘর ভেঙে পড়ে গেছে। যে অবস্থা দেখা দিয়েছে তাকে আমরা সবাই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। কারণ এই রাস্তাটিই আমাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা।
যুগিপাড়ার বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম, বন্দরপাড়া ইউসুফ আলী ও চৌধুরীর হাট গ্রামের বাসিন্দা নুর আলম বাংলানিউজকে বলেন, অনেক পুরাতন সেতু এটা। কিন্তু আমরা দেখেছি নদী ও ক্যানেল খনন করায় লাভ দেখতে গিয়ে এখন আমাদের ক্ষতি বেশি, চরম ক্ষতি হয়েছে। এর পর থেকে দুই পাশে ভেঙে পড়ে গেছে। আমরা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার জানিয়েছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা সফির উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বার বার বলার পরেও কোন কর্মকর্তা এখানে আসেনি। এখন আপনারা (গণমাধ্যমকর্মী) আসার খবরে তারা দেখতে এসেছে। আমরা পরিদর্শন চাই না, আমরা এটার সংস্কার চাই।
এদিকে দিনের থেকে যাতায়াতে রাতে দুর্ভোগ কয়েকগুণ হাড়ে বেড়ে যায় বলে জানান রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী বিভিন্ন যানবাহন যাত্রী ও চালকেরা।
স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ফরিদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সেতুর সংযোগ পয়েন্ট ভেঙে পড়ার পর একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে বস্তা ফেলে কিছুটা সংস্কারের চেষ্টা করেছি। তবে এই মুহূর্তে এই ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে দুর্ভোগ বেড়ে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পঞ্চগড় কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান বলেন, সম্প্রতি সময়ে নদী খননের পর পানি নেমে যাওয়ায় এবং বন্যা হওয়ায় এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে আমরা বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করেছি। তবে এই ভাঙনের স্থানগুলোতে স্থায়ী সমাধানে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৪
এসএম