ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পরমাণু জ্বালানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে রাশিয়ায় রূপপুর এনপিপি বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২৪
পরমাণু জ্বালানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে রাশিয়ায় রূপপুর এনপিপি বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ

ঢাকা: রাশিয়ার ত্রয়িতস্কে রসাটম গবেষণা ইন্সটিটিউটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের এক দল বিশেষজ্ঞ ভিভিইআর চুল্লিতে কম্পিউটার বিশ্লেষণ ট্যুল ব্যবহারের মাধ্যমে পরমাণু জ্বালানির ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তিন সপ্তাহের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। রসাটম জ্বালানি বিভাগ আয়োজিত প্রশিক্ষণ কোর্সটি পরিচালনা করেন তাত্ত্বিক পদার্থ বিদ্যা, কম্পিউটেশনাল গনিত এবং আধুনিক প্রকৌশল ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের বিশেষ করে রিয়্যাক্টর ফুয়েল- কুল্যান্ট একটিভিটি (RTOP-CA) কোড বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই কোডের মাধ্যমে পরমাণু জ্বালানি রডের অখণ্ডতা এবং ভিভিইআর চুল্লির প্রাইমারি সার্কিটে ইউরেনিয়ামের বিভাজনের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন পদার্থের নির্গমণ করা সম্ভব হয়। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা অস্বাভাবিক কোনও অবস্থায় পরমাণু জ্বালানির আচরণ সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান অর্জন করেন।

রসাটম গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক কিরিল ইলিন জানান, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ। কম্পিউটার স্টিমুলেশন ট্যুলের ব্যবহার আধুনিক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের একটি অংশ। আমাদের এই প্রোগ্রামে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্ত ছিল- লেকচার, টেকনিক্যাল ডকুমেন্টের পর্যালোচনা এবং জ্বালানি রডের অখণ্ডতা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহারিক কার্যক্রম।

রূপপুর এনপিপি’র ফুয়েল রড জ্যাকেট স্পেকট্রোমেট্রি এবং মনিটরিং বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ শরিফুদ্দীন তার মন্তব্যে বলেন, আমাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণটি ছিল একটি বড় সুযোগ। প্রোগ্রামের সকল লেকচার, এসাইনমেন্ট, টিউটোরিয়ালগুলো ছিল যথাযথ, সহজবোধ্য এবং আমাদের কাজের সাথে সম্পর্কিত।

প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশি প্রকৌশলীরা একটি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন এবং সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাদেরকে RTOP-CA ব্যবহারকারী সনদ প্রদান করা হয়।
জ্বালানি রড জ্যাকেটের ইন-প্রসেস মনিটরিং এর জন্য RTOP-CA কোড প্রবর্তন করা হয়। এর সাহায্যে ফিশন বিক্রিয়ার ফলে ভিভিইআর পরমাণু চুল্লির প্রাইমারি সার্কিটের কুল্যান্টের (শীতলকারী মাধ্যম) মধ্যে নির্গত বিভিন্ন পদার্থের কার্যক্রম এবং অখন্ডতা ক্ষুণ্ণ হওয়ার ফলে জ্বালানি রডের আচরণ সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাণী করা সম্ভব।

রসাটম নিয়মিতভাবে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। চুক্তি অনুযায়ী ১,৫০০ বাংলাদেশি প্রকৌশলী রাশিয়ায় রসাটমের বিভিন্ন স্থাপনায় প্রশিক্ষণ এবং ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করার সুযোগ পাবেন। ইতোমধ্যে রসাটম টেকনিক্যাল অ্যাকাডেমির অধীনে প্রায় ৮০০ জন এ জাতীয় প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন।

রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রকল্পটিতে দুটি বিদ্যুৎ ইউনিট থাকবে এবং এর মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২,৪০০ মেগাওয়াট। প্রতিটি ইউনিটে স্থাপিত হবে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর যা সকল আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পুরনে সক্ষম। রসাটম প্রকৌশল শাখা জেনারেল ডিজাইনার এবং কন্ট্রাকটর হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা,অক্টোবর ৮,২০২৪
এসকে/এমএম 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।