ঢাকা: রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন এলাকার একটি বাসা থেকে ৫৫ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় তিন গৃহকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় চুরির ৩১ ভরি ৪ আনা ৫ রতি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন, ওই বাসার স্থায়ী গৃহকর্মী তানজিনা আক্তার ফারিয়া ও পার্টটাইম গৃহকর্মী কহিনুর বেগম এবং নাজমা আক্তার ওরফে লাইজু।
পুলিশ জানায়, গত ৪ অক্টোবর থেকে খণ্ডকালীন (পার্টটাইম) দুই গৃহকর্মীর নির্দেশনার ওই বাসা থেকে দফায় দফায় স্বর্ণালঙ্কারগুলো চুরি করে স্থায়ী গৃহকর্মী তানজিনা। কারওয়ান বাজারের তিনটি দোকানে এসব স্বর্ণের কিছু অংশ বিক্রি করে ব্যাংকে এফডিআর করেন গৃহকর্মী লাইজু।
শনিবার (১২ অক্টোবর ) রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মো. সরওয়ার জাহান।
তিনি বলেন, গত ১৬ আগস্ট ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তা রোখসানা মজুমদার ব্যাংকের লকারে গচ্ছিত স্বর্ণালংকার এনে নিজের ১১৬/এ, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, ইস্কাটন গার্ডেনের বাসার আলমারিতে রাখেন। পরে ৮ অক্টোবর গহনা দেখার জন্য আলমারির মধ্যে থাকা ব্যাগ খুলে দেখেন, ব্যাগের মধ্যে থাকা ৫৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ডায়মন্ডের ৫টি আংটি নাই। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রমনা মডেল থানায় একটি চুরি মামলা দায়ের করেন তিনি। এতে ওই বাসার স্থায়ী গৃহকর্মী তানজিনা আক্তার ফারিয়া ও কহিনুর বেগম এবং অস্থায়ী গৃহকর্মী নাজমা আক্তার ওরফে লাইজুক আসামি করেন।
ওইদিনই বিকালে রাজধানীর কাকরাইল এলাকা থেকে চুরির সাথে জড়িত সন্দেহে গৃহকর্মী তানজিনা আক্তার ফারিয়া ও কহিনুর বেগমকে গ্রেপ্তার করে। পরে গতকাল শুক্রবার তাদেরকে আদালতে পাঠানো হলে আদালতে তানজিনা আক্তার ফারিয়া স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন যে, তিনিসহ গ্রেপ্তার কহিনুর বেগম ও নাজমা আক্তার ওরফে লাইজু এ চুরির ঘটনার সাথে জড়িত ছিল। আদালত কহিনুর বেগমের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রমনার ডিসি বলেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আসামির দেখানো মতে বাদির বাসার গৃহকর্মীদের শয়ন কক্ষ থেকে ৮ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। পরে ১১০/এ, নিউ ইস্কাটন রোড, রমনার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে শুক্রবার নাজমা আক্তার লাইজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ১৬ ভরি ১৫ আনা ৪ রতি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারের জন্য গ্রেপ্তার লাইজুকে নিয়ে কারওয়ান বাজারের স্বর্ণ মার্কেটে অভিযান চালনো হয়।
তিনি আরও বলেন, অভিযানে অনন্যা জুয়েলার্স থেকে গলিত অবস্থায় ২ ভরি ১২ আনা ৪ রতি ও নুসরাত জুয়েলার্স থেকে গলিত অবস্থায় ৩ ভরি ৮ আনা ৩ রতি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এই চুরির মামলায় মোট ৩১ ভরি ৪ আনা ৫ রতি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া তিনি স্বর্ণলঙ্কার বিক্রির টাকায় ১০ লাখ টাকার একটি এফডিআর করেছেন বলে স্বীকার করেন। অবশিষ্ট চোরাই স্বর্ণালংকার উদ্ধার ও ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৪
এমএমআই//এসআইএস/এমএম