নাটোর: নাটোরের লালপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার মধ্যবর্তী ভবানীপুর বিলে ব্যাপক জলাবদ্ধতায় হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ১৬০০ বিঘা জমির ফসল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিলের পানি নিষ্কাশনে মাত্র একটি সরকারি খাল থাকলেও অবৈধ দখলের কারণে বর্তমানে তার অস্তিত্ব নেই।
জানা যায়, ভবানীপুর বিল থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি খাল বহমান হয়ে উপজেলার ওয়ালিয়া পশ্চিম মণ্ডলপাড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে খলিষাডাঙ্গা নদীতে গিয়ে পড়েছে। বিগত কয়েক বছর আগে সরকারি বরাদ্দের মাধ্যমে বড়াইগ্রাম সীমানার অংশ খনন বা সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হয়। তবে লালপুর সীমানায় খালের যে অংশটুকু পড়েছে তার কিছু অংশ বিভিন্ন অস্থায়ী এবং স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন প্রভাবশালীরা।
এতে বড়াইগ্রাম অংশের পানি লালপুর অংশে জমা হয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশন সম্ভব হচ্ছে না। এতে ভবানীপুর-আটঘরি মাঠের প্রায় ১৬০০ বিঘা ধানসহ বিভিন্ন ফসল হুমকির মুখে পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানায়, প্রতিবছর বর্ষার সময় পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এ বিলের শতশত বিঘা জমির ফসল। এবারও একই অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় ফসল ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। এ অবস্থায় অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই জলাবদ্ধতার নিরসন না করা হলে এই এলাকার কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন।
এদিকে শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জেলার লালপুর ও বড়াইগ্রাম এই দুই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জলাবদ্ধতা নিরসনে লিখিত আবেদন দিয়েছেন এলাকাবাসী। ভবানীপুর বিলের সমস্যা নিরসন ও সরকারি খাল দখলমুক্ত করার যৌক্তিকতা তুলে এতে।
স্থানীয় কৃষক আমিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বার বার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও খাল সংস্কার না করায় প্রতিবছরেই হালকা বৃষ্টিপাত হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। খালটি সংস্কার করা হলে দুই উপজেলার হাজার হাজার বিঘা ফসলের জমি ও বসত ভিটা রক্ষা পাবে। বিষয়টি সমাধানে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
ভবানীপুর গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, বিলে আমার প্রায় ১০ বিঘা জমির ধান পানির নিচে ডুবে গেছে। খালটির লালপুর অংশে পানি নিষ্কাশন করা না হলে এ দুটি বিলের ফসল সব নষ্ট হয়ে যাবে।
বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য কামাল হোসেন জানান, সরকারিভাবে খালের বড়াইগ্রাম অংশ সংস্কার করা হলেও বার বার তাগাদা দিয়ে লালপুরের কিছু অংশ সংস্কার ও দখলমুক্ত না করায় প্রতিবছর হালকা বৃষ্টিপাতেই পানি জমে এ দুটি বিলের ফসল ডুবে যায়। এবারও অতিবৃষ্টিতে সব ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান ও বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস আবেদন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সহ স্থায়ী সমাধান করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৪
এসএম