ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২০ বছর বয়সেই আকাশ ছুঁলেন জয়পুরহাটের অদিতি

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
২০ বছর বয়সেই আকাশ ছুঁলেন জয়পুরহাটের অদিতি

জয়পুরহাট: অদিতি সরকার। মাত্র ২০ বছর বয়সেই কানাডার আকাশে পাইলট হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছেন।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার পাথুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সমাজকর্মী প্রয়াত অপূর্ব সরকার ও মাহবুবা সরকার দম্পতির মেয়ে অদিতি। তিন বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি।  

প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত জয়পুরহাট শহরের জামান মডেল প্রি-ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড একাডেমিতে শৈশব কাটলেও দার্জিলিংয়ের হিমালি বোর্ডিং ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন অদিতি।  

এরপর কলকাতার জেমস একাডেমিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এবং সেখানেই ও লেভেল সম্পন্ন করেন। পরে ঢাকার লালমাটিয়ার লরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ লেভেল সম্পন্ন করেন।

পরে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে কানাডার ভ্যানকুভার প্রিন্সিপাল এয়ার ফ্লাইং স্কুল থেকে পাইলট প্রশিক্ষণ নেন অদিতি। এরপর সেখানেই ইন্সট্রাক্টর রেটিং সম্পন্ন করে তিন বছর পাইলট প্রশিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন তিনি। এরপর ফার্স্ট অফিসার হিসেবে পাইলট হন তিনি।

প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় অদিতি হঠাৎই জানতে পারেন তার বাবা আর বেঁচে নেই। এ অবস্থায় নিজেকে সামলিয়ে মাসহ নিকটাত্মীয়দের উৎসাহে খণ্ডকালীন চাকরি করেই উড়োজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন।  

অদিতির মা মাহবুবা সরকার বলেন, ২০১৯ সালে মেয়ের বাবা অপূর্ব সরকার মারা যান। তখন আমি নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও মেয়ের পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পিছপা হইনি। সমাজের প্রতি আমার বার্তা- শত বাধা পেরিয়ে মেয়েরাও পারে আকাশ ছুঁতে। এর প্রমাণ আমার মেয়ে।  

বড় বোন অদিতির সাফল্যে ছোট বোন অর্নি জানায়, লেখাপড়া শেষে কারো মতো যদি হতে চাই, তাহলে সবার আগে আমার আপুর মতো হবো। আমি তাকে অনুসরণ করি।

অদিতির সাফল্যে শুধু পাথুরিয়া গ্রামের মানুষই নয়, পুরো জেলার মানুষ খুশি। জয়পুরহাটের নিভৃত পল্লীতে বেড়ে ওঠা মেয়েটি আজ বিদেশের আকাশে উড়োজাহাজ নিয়ে ঘুরছেন, ভেবে অবাক হন সহপাঠী, পাড়া-প্রতিবেশী ও স্কুল শিক্ষকরা।

অদিতির ছোট বেলার সেই জামান মডেল স্কুল অ্যান্ড একাডেমির পরিচালক মোছা. গুলশান আরা জামান অনেকটা দরদমাখা কণ্ঠে বলেন, সে ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী। সেই সঙ্গে খেলাধুলা ও সংস্কৃতিমনাও ছিল। আমরা তার এমন সাফল্যে আনন্দিত ও গর্বিত।

প্রয়াত অপূর্ব সরকার ও মাহবুবা সরকার দম্পতির তিন মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় মেয়ে অর্থি জর্জিয়ায় ডাক্তারি পড়ছেন। আর ছোট মেয়ে অর্নি ভারতের শিলিগুড়িতে এ লেভেলের শিক্ষার্থী।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।