ঢাকা: দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার যে অভিযোগ তুলেছেন বলে যে দাবি করেছেন, সেটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি উঠেছে।
শনিবার (২ নভেম্বর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে ইসকন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্য রঞ্জন বাড়ৈ। তিনি বলেন, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান আমাদের সংগঠনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও অসত্য হুমকি এবং নিষেধাজ্ঞামূলক বক্তব্য দিয়েছে। তার বক্তব্য শুধু আমাদের সংগঠনকেই আঘাত করেনি, এটি বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি, সহনশীলতা এবং সামাজিক ঐক্যের ওপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন মহল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসকন বাংলাদেশকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়াচ্ছে। যেমন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদসমূহে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে যে ছবি বা পতাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে, ইসকনের কোনো নিজস্ব পতাকা নেই। যে পতাকাটি দেখানো হয়েছে, তার সঙ্গে ইসকনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
লিখিত বক্তব্যে সংঘটির সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ইসকন বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের একটি অংশ হিসেবে আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে শান্তি, সম্প্রীতি ও সহনশীলতার বার্তা প্রচার করে আসছে। আমরা সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সর্বজনীন মূল্যবোধে বিশ্বাসী।
মাহমুদুর রহমানকে অবহিত করতে চাই, তিনি যদি তার বক্তব্য পরিহার করে দুঃখ প্রকাশ করে জাতির কাছে ক্ষমা চান, তাহলে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাবো। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের সংঘ তার সকল কর্মকাণ্ডে আইন ও শৃঙ্খলা মেনে চলে এসব গুজবের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ ও আধ্যাত্মিক সংগঠনের বিরুদ্ধে জনমনে ভুল ধারণা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ইসকন একটি অরাজনৈতিক ধর্মীয় আন্তর্জাতিক সংগঠন। এসব মিথ্যা প্রচারণা শুধু সংঘের ইসকনের ভাবমূর্তিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেনি, বরং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ইসকনের পাশাপাশি বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করছে এবং আমরা এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণার তীব্র নিন্দা জানাই।
চারু চন্দ্র আরও বলেন, সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন এ ধরনের ভিত্তিহীন অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সহায়তা করে। যারা গুজব ছড়িয়ে অথবা ইসকনকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে- তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন ইসকন বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হৃষীকেশ গৌরাঙ্গ দাস। উপস্থিত ছিলেন সংঘের কোষাধ্যক্ষ জ্যোতিশ্বর গৌর দাস ব্রহ্মাচারী, কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্য বিমলা প্রসাদ দাস, পার্থ সারথী কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, চিন্ময় গদাধর দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২৪
ইএসএস/এমজে