ঢাকা: একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষার গুণগতমান বাড়াতে ইউএসএআইডির উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রকল্প (এইচএসইপি) পাইলট প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বগুড়ার নাজ গার্ডেনে সরাসরি এবং কুমিল্লার বার্ড ও খুলনার সিটিইনে ভার্চ্যুয়ালি উদ্ধোধনী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাকে শক্তিশালী করার জন্য ইউএসএআইডি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রকল্প (এইচএসইপি) আনুষ্ঠানিকভাবে পাইলট ফেইজের জন্য রিসোর্স ট্রেইনি প্রশিক্ষণের এ আয়োজন করে।
আগামী ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ পাইলট প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ১২ হাজার প্রশিক্ষণার্থীর কাছে পৌঁছানো এবং ২০২৮ সালের আগস্টে প্রকল্পের শেষের মাধ্যমে প্রায় ৬০ হাজার প্রশিক্ষণার্থীর কাছে পৌঁছানো, যা বাংলাদেশের সম্পূর্ণ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাখাতকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের। সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করিম। অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং অধিদপ্তরের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ট্রেনিং ফেইজের মাধ্যমে তিনটি ভেন্যুতে প্রায় ৫০০ জন শিক্ষক, শিক্ষা নেতা ও সরকারি কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। এ প্রোগ্রামটি অনলাইন ফলোআপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্লাসরুমে শিক্ষাদানের অনুশীলন, প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বের উন্নয়ন ও শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়।
ইউএসএআইডির অংশীদারিত্বে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এ প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছেন। শিক্ষক, স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মকর্তাদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে দেশব্যাপী একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষার গুণগতমান বাড়ানোই এ প্রোগ্রামটির লক্ষ্য। তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা, নেতৃত্ব এবং পরিচালনার দক্ষতা বাড়ানোর বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। উপরন্তু, প্রজেক্টটি শিক্ষা ব্যবস্থার সিস্টেম-ওয়াইড ডিজিটাইজেশনকে অগ্রাধিকার দেয় যাতে অনুশীলনগুলোকে স্ট্রিমলাইন ও আধুনিকীকরণ করা যায়।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে কেমোনিক্স ইন্টারন্যাশনাল ইনকর্পোরেটেড, ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং টেন মিনিট স্কুলের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে এইচএসইপির কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
অনুষ্ঠান চলাকালীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরিতে বাংলাদেশ সরকার ও ইউএসএআইডির প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন।
প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামটি কম্প্রেহেনসিভ লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে অনলাইন রিসোর্সেসের সহায়তায় সামনাসামনি মতবিনিময় করে। একইসঙ্গে অংশগ্রহণকারীরা প্রফেশনাল লার্নিং কমিউনিটিতে তাদের মতামত এবং সর্বোত্তম অনুশীলনগুলোর জন্য যুক্ত হয়। প্রোগ্রামটি সফলভাবে শেষের পর প্রশিক্ষণার্থীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে একটি প্রশংসাপত্র পাবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক এবিএম রেজাউল করিম এইচএসইপির অনন্য নকশাবিষয়ক টেকসই শিক্ষা উন্নয়নে সহায়তা করা নিয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন। জাতীয় প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমের সাথে এইচএসইপির পদ্ধতিকে একীভূত করার ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নেতৃত্বের বিষয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইউএসএআইডির উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের মাধ্যমিক এবং তৃতীয় স্তরের শিক্ষার মধ্যে ব্যবধান দূর করা। এ উদ্যোগটি কর্মসংস্থান দক্ষতার উন্নতকরণ এবং সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সম্ভাবনা তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়ন করে, যা তাদের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন আনবে।
দেশজুড়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নের জন্য ইউএসএআইডি এবং বাংলাদেশ সরকারের একটি যৌথ প্রচেষ্টা হলো ইউএসএআইডির উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম, যা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রকল্প নামেও পরিচিত। প্রকল্পটি শিক্ষাবিদ ও শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাদান ও শেখার অভিজ্ঞতার উন্নতি সাধন করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক প্রশিক্ষণকে অগ্রাধিকার দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২৪
এমআইএইচ/আরবি