ঢাকা, বুধবার, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গৃহবধূকে হত্যার পর মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রেখে ডাকাতির চেষ্টা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
গৃহবধূকে হত্যার পর মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রেখে ডাকাতির চেষ্টা ঘটনাস্থল

বগুড়া: বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় দিনে-দুপুরে এক বাড়িতে ঢুকে উম্মে সালমা (৫০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার পর তার মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রেখে ডাকাতির চেষ্টা চালানো হয়েছে।  

রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা সদরের সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড থেকে পশ্চিমে বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়ক সংলগ্ন ‘আজিজয়া মঞ্জিল’ নামে চার তলা একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত উম্মে সালমা বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলার ডিএস ফাজিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ ও উপজেলা মসজিদের খতিব এবং ইমাম-মুয়াজ্জিন সমিতির সভাপতি আজিজার রহমানের স্ত্রী। এছাড়াও আজিজার রহমানের হজ কাফেলার একটি এজেন্সি রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদরাসা শিক্ষক আজিজার রহমানের তিন সন্তান। বড় ছেলে এবং মেয়ে ঢাকায় থাকেন। ছোট ছেলে (২৪) সাদ বিন আজিজার রহমান বাবা-মায়ের সঙ্গে দুপচাঁচিয়ায় বসবাস করেন। সাদ ডিএস ফাজিল মাদরাসার কামিল শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। আজিজিয়া মঞ্জিলের তৃতীয় তলায় সপরিবারে বসবাস করেন মাদরাসা শিক্ষক আজিজার রহমান। সকালে ৯টার মধ্যে আজিজার রহমান ও তার ছেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। ছেলে সাদ দুপুর ২টার পর বাড়িতে গিয়ে প্রধান ফটক তালাবদ্ধ দেখেন। পরে বিকল্প চাবি দিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢোকার পর ঘরের সবকিছু এলোমেলো দেখতে পান। ডিপ ফ্রিজের দিকে তাকিয়ে সেটিকে ভালোভাবে লাগানো হয়নি বলে মনে হলে সেটি খোলার পর তার ভেতরে মায়ের হাত বাঁধা মরদেহ দেখতে পান।  

এছাড়াও ঘরের ভেতরে কাপড়-চোপড় এলোমেলো এবং মেঝেতে একটি কুড়াল পড়ে থাকতে দেখা যায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আলমারি কাটার চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে কুড়াল দিয়ে আলমারি কাটার চেষ্টা করা হয়েছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহতের স্বামী মাদরাসা শিক্ষক আজিজার রহমান জানান, মাদরাসায় পৌঁছার পর সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। এরপর আর কথা হয়নি। স্টিলের আলমারি কুড়াল দিয়ে কাটার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সেটা ভাঙতে পারেনি। তাই মনে হচ্ছে টাকা-পয়সা বা স্বর্ণালংকার নিতে পারেনি।

নিহতের ছেলে সাদ বিন আজিজার বলেন, মা অনেক সময় বাইরে গেলে তালা দিয়ে যান। তবে তার ফিরে আসা পর্যন্ত যাতে যেন আমাদের অপেক্ষা করতে না হয় সেজন্য একটি করে বিকল্প চাবি আমাদের কাছে আছে। সেই বিকল্প চাবি দিয়েই আমি তালা খুলেছি।

এদিকে মাদরাসা শিক্ষক আজিজার রহমানের চারতলা বাড়ির প্রথম তলার বাসিন্দারা ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না বলে জানান। অন্য প্রতিবেশীরাও কোনো চিৎকার বা শব্দ শোনেননি। দিনে-দুপুরে বাড়িতে ঢুকে এভাবে একজন পর্দানশিন নারীকে হত্যা এবং হত্যার পর তার মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনায় রীতিমতো শঙ্কিত এলাকাবাসী। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি এলাকাবাসীর।

দুপচাঁচিয়া ও আদমদীঘি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজরান রউফ জানান, ডিপ ফ্রিজের মধ্যে উম্মে সালমার মরদেহ হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় ছিল। তবে গলায় কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে দুপুর ১টার দিকে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। তবে বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা বা স্বর্ণালংকার খোয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।