ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অসময়ে কুমার নদে ভাঙন, ধসে পড়ছে ঘরবাড়ি-স্থাপনা

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২৪
অসময়ে কুমার নদে ভাঙন, ধসে পড়ছে ঘরবাড়ি-স্থাপনা কুমার নদে অসময়ে ভাঙনে পাড়ের ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীনের পথে

ফরিদপুর: ফরিদপুরের কুমার নদে অসময়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে নদের পাড়ের ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।

 

এদের মধ্যে বহু পরিবার আছে, যারা দুবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে কুমার নদের পাড়ে ফের বাড়ি করেছেন। কেউবা নদের তীরে সরকারি রেলের জায়গায় বাড়ি করে মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়স্থল তৈরি করেছেন।  

কিন্তু অসময়ে কুমার নদের পাড় ভাঙনে প্রায় এক হাজার পরিবার মহা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। প্রতিদিন নতুন নতুন বাড়িঘর কুমার নদের পাড় ভাঙনে বসতভিটার তলদেশের অংশসহ ভেঙে পড়ছে।  

ইতোমধ্যে, ফরিদপুর শহরের চুনঘাটা ব্রিজ সংলগ্ন পূর্ব ও পশ্চিমাংশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙনের কবলে পড়ে ৫০-৬০টি পরিবারের বাড়িঘর, ফসলি জমি, ফলদ গাছপালা বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন, কুমার নদের পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম। ভাঙন যে একবারেই বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে। অসময়ে তীব্র ভাঙন এখন অসময়ের বড় দুর্যোগ। ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর উড়ে গেলেও নিজের ভিটা গাছপালা কিছু হলেও থাকে। কিন্তু নদ-নদীর ভাঙনে পাড়ে বসবাসরতদের ভিটে-মাটি, ফসলি জমি, গাছপালা সব কিছু কেঁড়ে নিয়ে যায়।  

বন্যায় ফসল ভেসে গেলেও জমিটুক থাকে। বাড়িঘর পুড়ে গেলে ছাইটুক থাকে। কিন্তু ভাঙনে সবটুকু শেষ হয়ে অবশিষ্ট আর কিছুই থাকে না। নদী ভাঙনে সকাল বেলার বাদশা সন্ধ্যা বেলায় একেবারে নিঃস্ব ফকির হয়ে যায়। মোট কথা জেলা সদর উপজেলার ৭-৮ নম্বর ওয়ার্ড দুটির কুমার নদের দুপাড়ে যে সব বসতি আছে, তাদের বাড়িঘর কোনো রকমেই রক্ষা পাচ্ছে না।

ভাঙনের বিষয়ে মো. জিহাদ হোসেন জাহিদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম থেকে ভাঙন শুরু হলেও গত একমাস ধরে পরিমাণ একটু বাড়লেও গত এক সপ্তাহে ভাঙনের তীব্রতা এমনভাবে বেড়েছে যা হঠাৎ করে দেখেই আঁতকে উঠছেন যে কেউই।

এ বিষয়ে মো. আক্কাস আলী নামে অপর আরেক ব্যক্তি বলেন, গত ৭২ ঘণ্টায় কুমার নদের পৌরসভার ৮-৯ নম্বর ওয়ার্ডের চুনাঘাটা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ব্রিজের পূর্ব এবং পশ্চিম পাশের উভয়পাড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে নদে সামান্য পানি থাকায় এই ভাঙন দেখা না গেলেও, এখন নদে পানি শূন্য হয়ে পড়ায় ভাঙন দৃশ্যমান হয়ে পড়েছে। দৃশ্যমান হয়ে উঠছে নদের দুপাড়ের তীব্র ভাঙনের ভয়াবহতা।  

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সরেজমিনে ৯ ওয়ার্ডের মদনখালী রেগুলেটর থেকে নদের পাড় দিয়ে হেঁটে কুমার নদের ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিবেদনকালে এই তীব্র ভাঙনের ভয়াবহতা দেখা যায়।

এ সময় কথা হয় দলিল লেখক মো. সাইফুল ইসলাম, দলিল লেখক মো. ফরিদ জমিদারের সঙ্গে।

তারা বলেন, হঠাৎ কুমার নদ ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদীভাঙন ঠেকাতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তা না হলে আরও শত শত বাড়িঘর কুমার নদে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, ভাঙন ঠেকাতে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।