ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সিভিল সার্ভিসে ‍‘ক্যাডার’ শব্দ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করবে কমিশন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২৪
সিভিল সার্ভিসে ‍‘ক্যাডার’ শব্দ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করবে কমিশন

ঢাকা: সরকারের কাছে সিভিল সার্ভিসে ‘ক্যাডার’ শব্দটি নেতিবাচক হওয়ায় বাদ দেওয়ার সুপারিশ করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।

রোববার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১২তম বৈঠক শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, প্রশাসন নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ। বিশেষ করে বিসিএস, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এটাকে নানা কারণে এখন মনে করা হয় ক্যাডার। এ ক্যাডার শব্দটির সঙ্গে নেগেটিভ থাকে। এজন্য জনপ্রশাসনের সংস্কার কমিশন অনেকগুলো সংস্কারের প্রস্তাব দেব। এর মধ্যে একটা থাকবে যে এ ক্যাডার শব্দটি বাদ দিয়ে যার যে সার্ভিস যেমন- সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সিভিল সার্ভিস হেলথ, সিভিল সার্ভিস অ্যাগ্রিকালচার এ রকম। এটা আমাদের বড় সংস্কার। এতে আমরা মনে করি অনেকের মানসিক শান্তি আসবে। এটা করা দরকার।

মোখলেস উর রহমান বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ট্যুর করতে গিয়ে দেখলাম, মানুষ মন থেকে যে কথাগুলো বলেছে এবং কয়েকটি অফিস সম্পর্কে মানুষের নেগেটিভ ধারণা রয়েছে। সে বিষয়ে আপনারাও জানেন, এগুলো আমি উল্লেখ করতে চাই না। তবুও দু-একটার কথা বলতে হয়- যেমন এসিল্যান্ড, রেজিস্ট্রি অফিস সম্পর্কে মানুষের বাজে ধারণা। এখানে দুর্নীতি এমন লেবেলের যে কোনো অভিযোগ নেই। সবাই দিয়ে যাচ্ছে। দিচ্ছে নিচ্ছে এবং এটাও বলে আগের স্যারের থেকে কম নিচ্ছেন। দুর্নীতির এ ধরনের একটা প্রেক্ষাপট আমাদের জিইয়ে রেখেছে।  

মাঠ পর্যায়ের ভিজিটে আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, আমরা যখন গোপালগঞ্জের পাশ দিয়ে যাই সেখানে ৫০০ বেডের একটা বিরাট মেডিকেল কলেজ তৈরি করা হয়েছে। এতে আমরা খুশি যে একটা কাঠামো তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনো চিকিৎসক, ছাত্র, নার্স নেই। এ ধরনের বিল্ডিং যদি মানুষ ছাড়া পড়ে থাকে সেসব নিয়ে আমাদের অবজারভেশন আছে। এসব বিষয় আমাদের সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে সুপারিশ আসবে।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের আরও কিছু ভিজিট বাকি আছে। যেমন প্রেসক্লাবে একটা আয়োজন করা হবে সেখানে আমরা আপনাদের কথা শুনবো। এফবিসিসিআইও আমাদের একটা ডেট দেবে, আমরা যাবো এবং তাদের কথা শুনবো। এটাই আমাদের কাজ। অনেক কাজ গুছিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়া অনলাইনে এক লাখ প্রশ্ন গেছে, সেগুলোর উত্তর সফটওয়্যারের মাধ্যমে দিতে পারবো।

সিনিয়র সচিব বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়, পরিবর্তনের জন্যই পরিবর্তিত সরকার এসেছে। আমরা কাজ করছি। আমাদের দোষটা কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদেরই বেশি। আমরা শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বলছি, আমরাইতো টিকিয়ে দিয়েছিলাম সরকার। আমি হয়তো ছিলাম না, কিন্তু আমাদের মতো কর্মকর্তারাইতো টিকিয়ে রেখেছেন। তখন তাদের একসুর আর ৫ আগস্টের পর আরেক সুর। এতে আপনারাও ভুক্তভোগী তখন আপনারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেননি। ।  

বিসিএস নিয়ে বললেন তবে ডিসি শব্দটি নিয়েও অনেকের আপত্তি আছে- সেখানে পরিবর্তন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, এ রকম আমরা অনেক জায়গায় পেয়েছি, যেমন জনপ্রশাসন না বলে জনসেবা বলা যায় কিনা, জেলা প্রশাসক ব্রিটিশদের সৃষ্টি। এ শব্দের বাইরে আরও অনেক শব্দ আছে যেমন- কালেক্টর, ডিস্ট্রিক্ট মেজিস্ট্রেট আছে এসব বিষয়ে সাধারণ মানুষ জানতে চায়। আমরা এসব নিয়ে সুপারিশ দেব। তবে সরকার সেটাই নেবে যেটা দেশের জনগণ চায়।  

শুধু শব্দ পরিবর্তন করে কী কোনো পরিবর্তন হবে কিনা জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, আসলে মানুষের মন ও মস্তিষ্কের পরিবর্তন করতে হবে। এ দুই জায়গার পরিবর্তনটা আগে করতে হবে। সামনে আরও পরিবর্তন দেখতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২৪, আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা
জিসিপি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।