ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

স্কুলছাত্রকে জ্যান্ত পুঁতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২৪
স্কুলছাত্রকে জ্যান্ত পুঁতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

ফরিদপুর: ফরিদপুরে এক স্কুলছাত্রকে রাতের আঁধারে ধরে নিয়ে মারধরের পর মাটি খুঁড়ে জ্যান্ত পুঁতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের আলীপুরে অবস্থিত একটি সংবাদপত্র কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ওই স্কুলছাত্রের পরিবার।

জিহাদ কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রের বাবা ফরিদপুর সদরের বড় মাধবপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মোস্তাক মাতুব্বর বলেন, গত শনিবার রাতে আমার স্কুলপড়ুয়া ছেলে জিহাদ মাতুব্বর (১৩) ওয়াজ শুনতে যাচ্ছিল। এ সময় এলাকার বখাটে কতিপয় কিশোর তাকে ধরে বেদম মারধর করে একটি কবরস্থানে নিয়ে কবর খুঁড়ে জ্যান্ত পুঁতে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় তারা জিহাদকে তার বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলে।  

এ ঘটনার পরে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কতিপয় তরুণ জিহাদকে মারতে মারতে জামার কলার ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে একটি কবরস্থানে। সেখানে পৌঁছে আবারও তাকে মারতে থাকে। এসময় এক তরুণকে কোদাল দিয়ে গর্ত খুঁড়তে দেখা যায়। এসময় জিহাদকে ওই যুবক বলে- ‘তোরে জবাই করবো না, জ্যান্তই পুইত্যা ফ্যালাবো। কি কবি ক? জায়গা পছন্দ কর। ’ তখন তাদের একজনকে কবর খুঁড়তে খুঁড়তে হা হা করে হাসিতে ফেটে পড়তে দেখা যায়। এরপর কেউ একজন সেখানে এক যুবককে ফোন ধরিয়ে দেওয়ার পরে তাদের মাঝে কথাবার্তা হয়। এর কিছুক্ষণ পর যুবকটি জিহাদকে ছেড়ে দিয়ে বলে, বাইচ্যা গেলি আইজক্যার মতো। আর কবি ক’? তারপর তাকে সজোরে কিলঘুষি মারতে থাকে তারা। '

জিহাদের মা মারিয়া আকতার বলেন, ভয়ে ছেলে বাড়িতে পৌঁছে বমি করে দেয়। রাতেই তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি আমরা। এখনও সে ট্রমায় আক্রান্ত হয়ে রয়েছে।  

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জিহাদ জানায়, কয়েক দিন আগে তার চাচাতো ভাইদের বাড়ির পেছনে নদীর পাড়ে জড়ো হয়ে শোরগোল করতে থাকা একদল বখাটের কাছে উচু স্বরে জানতে চেয়েছিল তারা কারা। এই অপরাধে ওইদিন সন্ধ্যায় প্রথমে তাকে এক দফায় মারধর করা হয়। এরপর শনিবার রাতে বাবার কাছ থেকে হালিম খাওয়ার জন্য টাকা নিয়ে ওয়াজের মাঠে যাচ্ছিল সে। তখন ওই যুবকেরা তাকে দোকান থেকে সিগারেট কিনে আনতে বলে আর তারপর তার সিগারেট কেনার ভিডিও করে। তখন তার বাবাকে সিগারেট কেনার ভিডিও দেখিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে জিম্মি করে নেয়।

এ ঘটনায় তার বাবা মোস্তাক মাতুব্বর বাদী হয়ে রোববার রাতে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।  

মামলায় সিফাত (২৪), মাসুম (২৩), মারুফ (২০), আরাফাত (২০), সজল (২২), সাকিলসহ (১৯) আরও চার পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।  

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, অভিযোগটি পাওয়ার পর খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বিষয়টি। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং রাতেই জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ একাধিক অভিযান চালিয়েছে। দ্রুতই তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।