ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কলকাতায় ডিএনএ নমুনা দিলেন আনারকন্যা ডোরিন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৪
কলকাতায় ডিএনএ নমুনা দিলেন আনারকন্যা ডোরিন

কলকাতা: কলকাতায় উদ্ধারকৃত দেহাংশ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের কি না, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন ছিল ডিএনএ পরীক্ষার। সেই মোতাবেক কলকাতায় এসে ডিএনএ নমুনা দিয়েছেন আনারকন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডোরিন।

নভেম্বরের শেষ দিকে কলকাতায় এসে নমুনা দিয়ে দিয়ে যান ডোরিন। এমনটা খবর জানা গেছে আনার মামলার অন্যতম তদন্তকারী সংস্থা পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি সূত্রে।

গত ১২ মে ভারতে আসেন আনোয়ারুল আজিম আনার। তিনি ওঠেন পূর্ব পরিচিত গোপাল বিশ্বাসের পশ্চিমবঙ্গের বরানগরের বাড়িতে। পরদিন ১৩ মে চিকিৎসা করাতে যাবেন বলে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন এমপি আনার। কিন্তু ওইদিন রাতেই নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের বহুতল আবাসনের ‘বিইউ-৫৬’ ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা।

জানা যায়, এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন প্রবাসী মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন। তার নির্দেশেই কসাই খ্যাত জিহাদ হাওলাদারসহ ৪ জন আনারকে ওই আবাসনে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

এ ঘটনায় সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া অন্যতম অভিযুক্ত বাংলাদেইশ নাগরিক সিয়াম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, আনার হত্যায় যুক্ত ছিলেন তিনি। নিউটাউনের আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজে সিয়ামকে দেখা গিয়েছিল।

জিয়াদ এবং সিয়ামকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আনারের শরীর থেকে মাংস আলাদা করে সেগুলোকে ব্যাগে ভরে রাখেন। পরে সেই লাশের টুকরো পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার ভাঙ্গড় ব্লকের কৃষ্ণমাটি খাল এলাকায় ফেলা হয়। এরপর ওই খাল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু হাড় উদ্ধার করে পুলিশ, যা দেখে সিআইডি কর্মকর্তা ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান সেগুলি মানুষের হাড়।

এরপর সঞ্জীবা গার্ডেনের ওই আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ৪ কেজি মাংস। উদ্ধার ওই মাংস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে। সেখানের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এসব পুরুষের দেহাংশ।

সেই দেহাংশ আনারের কিনা, তা নিশ্চিত হতেই ডিএনএ পরীক্ষা জরুরি ছিল। সেক্ষেত্রে অনেক আগেই নিহত এমপি আনারের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডোরিন কলকাতায় আসার কথা থাকলেও নানা কারণে তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে নভেম্বর মাসে কলকাতায় এসে সিআইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি এবং ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তার কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তদন্তকারী সংস্থা।

ওই মামলার তদন্ত করতে কলকাতায় এসেছিল তৎকালীন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। সঞ্জীবা গার্ডেন, বাগজোলা খালসহ বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনের পাশাপাশি দফায় দফায় সিআইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডিবিপ্রধান।

গত ২৩ মে জিহাদ এবং ৭ জুন সিয়ামকে গ্রেপ্তারের পর আগস্ট মাসে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত জেলা আদালতে প্রায় ১২০০ পাতার চার্জশিট জমা পড়ে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩০২ (অপরাধমূলক নরহত্যা), ২০১ (তথ্য প্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা) এবং ১৪ ফরেনার্স আইনে মামলা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।