মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় বিষমুক্ত সবজি আবাদের পাশাপাশি এক সঙ্গে একই জমিতে তিন সবজির আবাদ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন চাষিরা।
সাতটি উপজেলার মধ্যে সবজি চাষে এরই মধ্যে খ্যাতি অর্জন করেছে সাটুরিয়া।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ও ফুকুরহাটি ইউনিয়নের চাষিরা স্বল্প খরচে একাধিক সবজি আবাদে মনোনিবেশ করেছেন। রমজানের বাজার ধরতে এরই মধ্যে কুমড়া, শসা ও করল্লার আবাদ শুরু করেছেন। এক জমিতে তিনটি সবজির আবাদে যেমন খরচও কম ঠিক তেমনি ফলনও আশানুরূপ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এই ধরনের আবাদ প্রথম দিকে শুরু করেন উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের জান্না এলাকার মধ্য বয়সী চাষি রাহেদুল ইসলাম। তার এই ব্যতিক্রম চাষাবাদের সাফল্য দেখে এখন স্থানীয় অনেক চাষিরা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে চাষাবাদ করছেন। এক খরচে তিন ফসল! ফলনও বাম্পার, মুনাফাও অনেকাংশে বেশি, এই তিনটি বিষয় বিবেচনা করে স্থানীয়দের মাঝে এখন আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। উপজেলার শত শত শতাংশ জমি এখন একই পদ্ধতি অনুসরণ করে তিনটি ফসল আবাদ করছেন চাষিরা।
ফুকুরহাটি ইউনিয়নের জান্না এলাকার সবজি চাষি রাহেদুল ইসলাম বলেন, আমার নিজস্ব জমি তেমন নেই তবে বাৎসরিকভাবে জমি ভাড়া নিয়ে সবজির আবাদ করে আসছি বেশ কয়েক বছর ধরে। এক জমিতে একটি সবজির আবাদ করলে অনেকাংশেই লোকসান হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ বিষয় মাথায় নিয়ে আমি উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও নিজস্ব বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে এক জমিতে সমসাময়িক সময়ের তিনটি করে সবজির আবাদ করছি। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আমি যেই সবজি আবাদ করেছি, সব সবজিরই ফলন ভালো হয়েছে। একটি মৌসুমে দুই বা তিন ধরনের সবজির আবাদ এক সঙ্গে করতে পারলে বাজার দর সব সময় ভালো পাওয়া যায়। এভাবে এক জমিতে তিন সবজির আবাদ করা দেখে এখন অনেকেই এক জমিতে তিনটি করে সবজির আবাদ করছেন ।
ধানকোড়া ইউনিয়নের কামতা এলাকার সবজি চাষি আবুল হোসেন বলেন, আমি এই মৌসুমে রাহেদুল ভাইয়ের দেখা-দেখি ৯০ শতাংশ জমিতে শসা, করল্লা ও কুমড়া আবাদ করেছি। এভাবে সবজি আবাদ করলে খরচ অনেকাংশেই কম হয়। আগে একটি করে সবজির আবাদ করায় অনেক সময় লোকসান হয়েছে আমার। যতটুকু সবজির আবাদ করেছি তাতে জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে তোলা পযর্ন্ত ৬০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। রমজানের মধ্যে যদি বাজার ধরতে পারি তবে সব খরচ বাদ দিয়ে দ্বিগুণের মতো লাভ হবে। আব্দুল রহিম নামে আরও এক চাষি বলেন, গত বছর থেকে আমি এক জমিতে দুই এবং তিন ধরনের সবজির আবাদ করছি আর এতে করে সবজির ফলনও ভালো হচ্ছে। এক সঙ্গে এই সবজিগুলো বাজারে নিলে প্রথম থেকে শেষ পযর্ন্ত ভালো বাজার দর পাওয়া যায়। জমিতে সবজি শেষ হওয়ার পরপর আবার নতুন করে সবজি রোপণ করা যায়। একইভাবে আবারও সবজির আবাদ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার উপজেলার সবজি চাষিদের কাছাকাছি গিয়ে আমাদের কর্মীরা তাদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন। রমজানকে সামনে রেখে মাঠে যে সব সবজির আবাদ হচ্ছে চাষিরা সঠিক সময়ে বাজারে তুলতে পারলে ভালো মুনাফা পাবেন বলে আমার মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫
আরএ