ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টার কাছে সাদপন্থিদের ১০ দফা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
প্রধান উপদেষ্টার কাছে সাদপন্থিদের ১০ দফা

ঢাকা: তাবলিগের চলমান সমস্যা সমাধান করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন সাদপন্থি মুসল্লিরা। তারা সরকারের কাছে ১০ দফা দাবি পেশ করেন।

 

আজ (সোমবার) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন সাদপন্থি পক্ষের মাওলানা শফিক বিন নাঈম।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা না হলে দেশে ভয়াবহ অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেন তারা।  

এই শঙ্কা দূর করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নয়; প্রধান উপদেষ্টাকে উভয়পক্ষের মুরব্বিদের সমঝোতার বৈঠক করার আহ্বান জানান তারা।  

সাদপন্থিদের দাবিগুলো হচ্ছে -

(১) তবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির হজরত মাওলানা সাদ কান্ধলভি অনুসারী সকল মুরুব্বিদের নামে করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

(২) আতিয়া বিন নূরকে অতিসত্বর নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।

(৩) কাকরাইল মসজিদ টঙ্গি বিশ্ব ইজতিমা ও সারা বাংলাদেশে মসজিদভিত্তিক তাবলিগের কাজকে সমান অধিকারের ভিত্তিতে পরিচালনার পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।

(৪) তাবলিগের যেকোনো বিষয়ে হেফাজত বা ‘জোবায়েরপন্থি’রা এক পক্ষের ব্যক্তিদের সাথে বসে সিদ্ধান্ত গ্রহণ পরিহার করতে হবে।  

(৫) সঠিক সময়ে আমাদের কাকরাইল মসজিদ এবং টঙ্গী ইজতিমা ময়দান বুঝিয়ে দিয়ে আমাদের বিশ্ব ইজতিমার নির্দিষ্ট তারিখে ইজতিমা অনুষ্ঠান করার সকল কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে।

(৬) সারাদেশে ‘জোবায়েরপন্থি’ ও হেফাজত-কর্মীরা নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের ওপর যে জুলুম ও নির্যাতন চালাচ্ছে, সেসবের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

(৭) বার বার  তাবলিগের সাথীদের এমন সংঘর্ষ করতে না হয়, সেজন্য রাজনৈতিক ব্যক্তি ছাড়া তাবলিগের উভয়পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

(৮) বিদেশ থেকে আসবেন - এমন মেহমানদের ভিসাসংক্রান্ত যাবতীয় ইন্তিজাম দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

(৯) সারা দেশে তাবলিগের সাথীদের পরিচালিত মসজিদ ও মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরীহ ছাত্র ও শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

(১০) যেকোনো অবস্থায় সাধারণ মুসল্লি, গণমাধ্যমকর্মী ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব হামলা ও উগ্রপন্থার কাজে মাদরাসার অবুঝ ছাত্রদের ব্যবহার করা যাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর টঙ্গীর ময়দানে যে দুঃখজনক সাংঘর্ষিক ঘটনা ঘটেছে, সে ঘটনায় আমরা মর্মাহত। আমরা গভীর উদ্যোগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, এই ঘটনাকে রাজনৈতিক আলিমগণ তাদের স্বার্থসিদ্ধির প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ‘ম্যাসাকার’ করে চলেছেন। সারা দেশে অহিংস ও শান্তিপ্রিয় তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীদের ঘর-বাড়ি ও দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হচ্ছে এবং বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সাথীদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ হচ্ছে। বিভিন্ন মসজিদে সাথীদের নামাজ ও ইবাদত করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এসব নির্মম ও অতি দুঃখজনক ঘটনা ইসলামকে বিশ্বের দরবারে ভীষণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

তারা আরও বলেন, কোনো পরিস্থিতিতেই আমাদের নিয়ে দেশ অস্থিতিশীল হোক- আমরা চাই না। দেশে একটি সন্ত্রাসী মহলের ভয়াবহ জুলুম বন্ধে সরকার, সুশাসন, মানবাধিকার সংগঠন, গণমাধ্যম, বিবেকবান সুধী সমাজ ও জাতিসংঘসহ সকল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা কামনা করছি।

লিখিত বক্তব্য আরো বলা হয়, একটি রাজনৈতিক মহলের প্রকাশ্য ইন্ধন, উসকানি ও মদতে টঙ্গীতে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  

আরও পড়ুন>> জামিন চাইলেন সাদপন্থীদের প্রধান মুরব্বিসহ ২৫ জন

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
টিএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।