ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসক লাঞ্ছিত, গ্রেপ্তার ১

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসক লাঞ্ছিত, গ্রেপ্তার ১ ফাইল ফটো

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মোমেনা বেগম (৪০) নামে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বজনদের হাতে চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় শম্পা বেগম (৩৯) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।

শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদ হাসান বলেন, ঢামেক হাসপাতালে একজন নারী চিকিৎসক রোগীর স্বজনদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ ঘটনায় ডা. মানার হাফিজ থানায় গিয়ে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত শম্পাকে রাতেই আটক করা হয়। পরে শম্পাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

মৃত মোমেনা বেগমের মেয়ে হাফিজা আক্তার বলেন, তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার মোজাখালী গ্রামে। তার মাকে স্ট্রোকজনিত কারণে গত ২১ ডিসেম্বর ভোরে ঢামেক হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন তার মায়ের শারীরিক অবস্থা ক্রিটিক্যাল। তার আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। এরমধ্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় আইসিইউ খুঁজতে থাকি। কিন্তু কোথাও আইসিইউ ম্যানেজ করতে পারছিলাম না। আমার মা হাসপাতালের মেঝেতে ছিলেন। বেডও পাচ্ছিলাম না। সেখানে অক্সিজেনের সাপোর্টও পাচ্ছিলাম না।

তিনি বলেন, গতরাতে আমি আফতাব নগরের বাসায় ছিলাম। রোববার (২২ ডিসেম্বর) সারা দিন চিকিৎসক আসেনি। হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে ছিলেন আমার খালা শম্পা ও খালু নাজির হোসেন। রাত ১০টার দিকে খালা ফোন কলে জানান, তার মায়ের শারীরিক অবস্থা ভালো না। এ খবর শুনে আমি দ্রুত হাসপাতালে আসি।  হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মানার হাফিজ ২০০ ওয়ার্ডে এসে জানান, তার মা আর নেই।

তিনি আরও বলেন, মায়ের মৃত্যুর পর চিকিৎসক চলে যাওয়ার সময় আমার খালা শম্পা চিকিৎসকের হাত ধরে টান দিয়ে বলেন, সারাদিন আমার বোনকে দেখতে আসেননি কোনো চিকিৎসক। তবে চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলা হয়নি। তখন চিকিৎসক উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা জড়ো হয়ে যান। এ সময় কয়েকবার চিকিৎসকের কাছে ক্ষমাও চাওয়া হয়। পাশের বেডের একটি ছেলে চিকিৎসকের হাত ধরে ক্ষমা করে দিতে বললে তিনি আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তবে ওই ছেলেকে তিনি চেনেন না। পরে আমার খালাকে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।  

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, গতরাতে হাসপাতালে রোগী মারা যাওয়াকে কেন্দ্র করে এক নারী চিকিৎসকের গায়ে হাত দিয়েছে রোগীর স্বজনরা। এ ঘটনায় ওই রোগীর স্বজন শম্পাকে আটক করে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের কয়েকজন রোগীর স্বজনরা বলেন, গত দুইদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা খুবই কম ছিল। পরে জানতে পেরেছি কিছু চিকিৎসক বেতন ও ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছেন।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট অবহেলায় এক শিক্ষার্থী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢামেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনা ঘটে। এ হামলায় নিউরো সার্জারি বিভাগের কয়েকজন চিকিৎসক আহত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
এজেডএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।