নীলফামারী: ঢাকার সচিবালয়ে ভয়াবহ আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় নিহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসকর্মী শাহানুজ্জামান নয়ন। এ ঘটনা জানাজানি হলে নিহতের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ছড়ান আটপুনিয়া গ্রামে শুরু হয় শোকের মাতম।
মা নারগিস বেগম সন্তানের শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। স্বজন ও এলাকাবাসীর বুকফাটা আর্তনাদে সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের পুরো আটপুনিয়া গ্রাম যেন শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। নয়নের বাবা আখতারুজ্জামান নির্বাক হয়ে আছেন। সন্তান নিহত হওয়ার খবর মোবাইল ফোনে পাওয়ার পর থেকে তিনি স্তব্ধ। কারও সঙ্গে কথা বলছেন না।
নয়নের চাকরির বয়স মাত্র দুই বছর। মূল কর্মস্থল ছিল সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস অফিসে। ডেপুটেশনে কর্মরত ছিল ঢাকার তেজগাঁও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে। সেখানে ২১ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ টিমের সঙ্গে কাজ করছে। বুধবার গভীর রাতে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবর পেয়ে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে নয়নও ঘটনাস্থলে যায়।
দায়িত্বপালনকালে একটি ট্রাক তাকে চাপা দেয়, এতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এলাকাবাসী বলেন, কয়েকদিন আগে পাওনাদারের টাকা পরিশোধ করতে অগ্রণী ব্যাংক থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে পাওনাদারের টাকা পরিশোধ করেছে- এখন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ কীভাবে শোধ করবে, সংসারে কীভাবে চলবে?
বাবা আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। ছেলের বদলে আমার মৃত্যু কেন হলো না। বাবা হিসেবে সন্তানের লাশ বহন করা কী কষ্টের তা কাউকেই বোঝানো যাবে না। তিনি সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেন।
নয়ন এলাকায় খুব জনপ্রিয় ছিল নয়ন। তার মৃত্যুতে গ্রামে যে শোক সৃষ্টি হয়েছে, তা এলাকাবাসীকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে।
নয়নের পরিবার সূত্রে জানা যায়, কৃষক আখতারুজ্জামানের এক ছেলে এক মেয়ের মধ্যে নয়ন ছোট। ছোট বেলা থেকে তার ফায়ার সার্ভিসে কাজ করার স্বপ্ন ছিল। ২০২২ সালে সেই স্বপ্ন পূরণে যোগদান ফায়ার ফাইটারের চাকরিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
জেএইচ