ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মীরহাজিরবাগে রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহটি ছিল অটোরিকশাচালক জসিম মোল্লার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৫
মীরহাজিরবাগে রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহটি ছিল অটোরিকশাচালক জসিম মোল্লার

ঢাকা: ছেলের কাছ থেকে বাবাকে আলাদা করে নেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর মধ্যরাতে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগও হয় তার পাশাপাশি এর কয়েকঘণ্টা পরই যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় রাস্তার পাশে মিলে বাবা জসিম মোল্লার (৩৮) মরদেহ।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে মরদেহ শনাক্ত করেন তার পরিবার। এরআগে, সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে মরদেহ উদ্ধার হয় তার। পাঠানো হয়েছিল মর্গে।

নিহত জসিমের বাড়ি ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ভোজুরডাঙ্গি গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত খবির মোল্লা। যাত্রাবাড়ী ধলপুর এলাকার একটি গ্যারেজের অটোরিকশা ভাড়ায় চালাতেন তিনি। পরিবার নিয়ে থাকতেন ধলপুর কোল্ডস্টোরেজ গলিতে।

নিহতের ছোট ভাই মো. বাবু মোল্লা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় ছেলে বিল্লালকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন জসিম। এর কিছুক্ষণ পর তার ছেলে বিল্লাল বাসায় ফিরলেও জসিম ফিরেনি। এরপর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তার। এলাকার বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। যাত্রাবাড়ী থানাতেও তার সন্ধানের জন্য যাওয়া হয়। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার থানা পুলিশের মাধ্যমে একটি মরদেহ উদ্ধারের খবর পান তারা। পরে থানায় গিয়ে জসিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরবর্তীতে বুধবার ঢাকা মেডিকেলে তার মরদেহ শনাক্ত করে এবং দাফনের জন্য মরদেহটি বুঝে নেন।

তিনি অভিযোগ করে জানান, জসিম মোল্লার পরিচিতরাই তাকে কল করে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তবে কারা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা এখনও তিনি জানেন না।

ঘটনার আগ মুহূর্তে জসিম মোল্লার সঙ্গে থাকা ১২ বছর বয়সী ছেলে বিল্লাল জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় গেসু নামে একজন তার বাবা জসিম মোল্লাকে ফোন করে দেখা করতে বলে। তখন ছেলে বিল্লালকে নিয়ে জসিম দয়াগঞ্জ এলাকায় যান। সেখানে একটি গলিতে ১০-১২ জন অপেক্ষা করছিল। সেখানে জসিমের সঙ্গে তারা কথা বলে। এক পর্যায়ে ছেলে বিল্লালকে সেখান থেকে বাসায় পাঠিয়ে দিতে বলে জসিমকে। তখন জসিম ছেলে বিল্লালকে একটি রিকশা যোগে বাসায় পাঠিয়ে দেন। ছেলে বাসায় পৌঁছানোর পর রাত বারোটার দিকেও বাবার সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়। কিছুক্ষণ পর বাসায় ফিরবেন বলে জানান তখন। কিন্তু এরপর থেকেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। সেখানে যারা তার বাবার জন্য অপেক্ষা করছিল তাদের সবাইকে চেনে না বিল্লাল। তবে তারাই তার বাবাকে খুন করেছে বলে অভিযোগ তার।

যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম জানান, খবর পেয়ে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মীরহাজিরবাগ তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা রোডের ইঞ্জিনিয়ার গলির মাথায় পাকা রাস্তা থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তার বাম পা, বাম হাতের রগ কাটা ছিল। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ঘটনাস্থলে ফেলে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

তিনি জানান, এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। তবে পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা এজহার জমা দেবে। খুব শিগগিরই ঘাতকদের ধরা সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৫
এজেডএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।