ঢাকা: সরাসরি হজ কার্যক্রমে অংশ নিতে এজেন্সির সর্বনিম্ন হজযাত্রী নির্ধারণের ক্ষেত্রে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। এটি সৌদি সরকারের এখতিয়ার বলে জানান তিনি।
হজ ব্যবস্থাপনার সর্বশেষ অগ্রগতি বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সংবাদ সচিবালয়ে সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
গত ৯ ডিসেম্বের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী চিঠির মাধ্যমে এজেন্সি প্রতি ন্যূনতম হজযাত্রীর সংখ্যা জানায় সৌদি সরকার। এতে বলা হয় - এজেন্সি প্রতি সর্বনিম্ন এক হাজার জন হজযাত্রী থাকলে তাদের সরাসরি হজে পাঠাতে পারবে।
সৌদি সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশের হজ এজেন্সিগুলো। কারণ, বেশিরভাগ এজেন্সিই সেই কোটা পূরণ করতে পারে না। তাই এবার হজ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকারও হুমকি দিয়েছে এসব হজ এজেন্সি।
সেই হুমকির বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজ এজেন্সি প্রতি ন্যূনতম হজযাত্রী নির্ধারণ করে থাকে সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ন্যূনতম কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এ দেশের হজ ব্যবস্থাপনার বাস্তবতা ও এজেন্সির কথা বিবেচনায় সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা কমানোর বিষয়ে আমি ও আমার মন্ত্রণালয় যার পর নাই চেষ্টা করেছি। হজ দ্বি-রাষ্ট্রিক কার্যক্রম-এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোও আমাদের মনে রাখতে হবে। হজযাত্রীরা যাতে কোনো সংকট কিংবা অনিশ্চয়তার মুখোমুখি না পড়ে সেটি অবশ্যই আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। তবে এজেন্সি মালিকদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে। আজকেও তাদের সঙ্গে বৈঠক আছে।
হজ এজেন্সি মালিক বা পরিচালকদেরকেও দু-একদিনের মধ্যেই সৌদি সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক লিড এজেন্সি গঠনসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অনুরোধ জানান উপদেষ্টা।
এ সময় তিনি তথ্য দেন, ২০২৫ সনের হজে সর্বোচ্চ হজযাত্রী প্রেরণকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান এবং ভারতের জন্য এজেন্সি প্রতি সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা দুই হাজার জন নির্ধারণ করা হয়েছে।
আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, ২০২৫ সনের হজে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের জন্য সেবাদানকারী কোম্পানি নির্বাচন, তাঁবুর এলাকা সংরক্ষণ, মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি/হোটেল ভাড়া, কেটারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এখনও শুরু করা হয়নি। এসব কার্যক্রম সম্পাদনের সর্বশেষ আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত রয়েছে।
তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদেরকে নির্দেশনা দেওয়া ও সকল ধরনের চুক্তি সম্পাদন এবং হজযাত্রীদের জন্য সকল প্রস্তুতি শেষ করার অনুরোধ করেন।
জানা গেছে, ধর্ম উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হজচুক্তি সম্পাদনের জন্য শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সৌদি আরবের উদ্দেশে রওয়ানা করবে।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের জানানো হয়, এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করার সুযোগ ছিল। এর বিপরীতে নিবন্ধিত হয়েছেন ৮৭ হাজার ১০০ জন। এরমধ্যে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন হজ পালন করবেন।
এছাড়া এবার ৯৫৩টি এজেন্সিকে হজ কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৭৫৩টি এজেন্সি থেকে হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এসব এজেন্সি থেকে একজন থেকে ছয় হাজার জন পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যারা ইংল্যান্ড, পূর্ব ইউরোপ, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে থাকেন থাকেন। আগামী বছর তাদের বাংলাদেশের অনুকূলে নিবন্ধন সম্পন্ন করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ওখান থেকেই তারা নিবন্ধন করতে পারবেন। তারা আমাদের জাতীয় কোটার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২৫
এমআইএইচ/এসএএইচ