ঢাকা: বাংলাদেশে আটক ভারতীয় জেলেদের শারীরিক নির্যাতনের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ভারতীয় জেলেদের শারীরিক নির্যাতনসহ অযৌক্তিক মন্তব্য এবং বানোয়াট অভিযোগের জন্য বাংলাদেশ চরম ও গভীর হতাশা প্রকাশ করে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, কোনো অবস্থাতেই আটক জেলেদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়নি। বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে দেখা গেছে, এ ধরনের কোনো অসুস্থ আচরণ বা শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। বাংলাদেশ উল্লেখ করতে চায় যে, আটক ৯৫ জন ভারতীয় জেলে/ক্রু সদস্যের সঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানকালে যথাযথভাবে আচরণ করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিদের কনস্যুলার অ্যাকসেস দেওয়া হয়েছিল, যারা জেলেদের আটকের সময় দেখতে গিয়েছিলেন।
ভারতীয় কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরাও গত ২ জানুয়ারি এ জেলেদের মুক্তি দেওয়ার সময় এবং ৪ জানুয়ারি মোংলা থেকে জেলেদের প্রস্থানের সময় উপস্থিত ছিলেন। যেসব হাসপাতাল থেকে ভারতীয় জেলেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে, তারা নিশ্চিত করেছে যে, জেলেদের মেডিকেল ফিটনেস ছিল। সামুদ্রিক সীমান্তের দিকে তাদের যাত্রার সময় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ সমস্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সব পক্ষকে এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে যা দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধকে ক্ষুণ্ন করে।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, আটক ভারতীয় জেলেদের বাংলাদেশে মারধর করা হয়েছে। যা নিয়ে দুদেশের গণমাধ্যমে খবর প্রচার হয়।
আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমারেখার কাছে ৫ জানুয়ারি বিকেলে ভারতে আটক ৯০ জন বাংলাদেশি জেলে/ক্রু এবং বাংলাদেশে আটক ৯৫ জন ভারতীয় জেলে/ক্রুর পারস্পরিক প্রত্যাবাসন সফলভাবে সম্পন্ন হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদপ্তর এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ৯০ জন বাংলাদেশি জেলে/ক্রু সদস্যকে গ্রহণ এবং ৯৫ জন ভারতীয় জেলে/ক্রু সদস্যকে ভারতীয় কোস্ট গার্ডের কাছে হস্তান্তর করে।
একই সঙ্গে আটক জাহাজের বিনিময়ও সম্পন্ন হয়। দুটি বাংলাদেশি মাছ ধরার জাহাজ ‘এফভি লায়লা-২’ এবং ‘এফভি মেঘনা-৫’ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। অপরদিকে ছয়টি ভারতীয় মাছ ধরার নৌকা ভারতে ফেরত দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৫
টিআর/এইচএ