ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

যশোরে শেষ হলো গুড়মেলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
যশোরে শেষ হলো গুড়মেলা গুড়মেলার শেষ দিনে বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি

যশোর: যশোরের ঐহিত্য খেজুরের গুড় সংরক্ষণ ও প্রসারে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে শেষ হয়েছে চৌগাছার গুড়মেলা।  

উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি।

তিনি মেলা ঘুরে উচ্ছ্বসিত হয়ে যশোরের যশ খেজুরের রস ও গুড় প্রসারে সরকারের পক্ষ থেকে সব প্রকার সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।

তিন দিনব্যাপী এ মেলায় চৌগাছা ছাড়াও যশোরের অন্যান্য উপজেলা এবং আশপাশের জেলাসমূহ থেকেও সাধারণ মানুষের সমাগম ঘটে। মেলা ঘিরে মানুষের মধ্যে বিপুল আগ্রহের সৃষ্টি হয়। গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে পুরো এলাকায় এক অন্য রকম আবহের সৃষ্টি হয়।

মেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গণের মানুষসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ দেখা যায়। ওঠে উন্নতমানের ভালো মানের গুড় ও পাটালি, যা সচরাচর বাজারে পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।

শুক্রবার সমাপনী অনুষ্ঠানে মেলায় স্টল দেওয়াদের মধ্যে সেরা তিনজনকে পুরস্কৃত করেছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি। তিনি বলেন, খেজুর গুড়ের বাজারজাত ভালোভাবে করতে হলে চাহিদা তৈরি করতে হবে। এ পণ্য বিক্রির জন্য ব্র্যান্ডিং করতে হবে।  

নাসিমুল গণি বলেন, বাজারে এক নম্বর, না ভেজাল গুড় পাওয়া যায় তা ক্রেতারা বুঝতে পারেন না। সে কারণে খেজুরের গুড়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন কমে যাচ্ছে। এর থেকে উত্তরণ ঘটানো খুব দরকার। এজন্য যশোরের জিআই পণ্য হিসেবে খেজুরের গুড়ের ব্র্যান্ডিংটা সততার সঙ্গে ধরে রাখতে হবে। এ কাজে সরকারের পক্ষ থেকে যেমন সহযোহিতা করা হবে, তেমনি সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।  

মেলার সাফল্য নিয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি আরও বলেন, যা আশা করেছিলাম তার থেকে অনেক ভালো হয়েছে গুড়মেলা। এটাতেই থেমে থাকলে হবে না। খেজুরের গুড় ও রস সংরক্ষণের জন্য যশোরসহ এ এলাকায় হাব তৈরি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে নাসিমুল গণি যশোরের খাজুরার একটি প্রকল্পের উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে জাপানের সহায়তায় সুন্দর মাটির পাত্রে গুড় ও রস সংরক্ষণ করা হচ্ছে। মানসম্মত গুড় উৎপাদিত হচ্ছে। এর চাহিদাও বেশ। আর মান থাকলেই চাহিদা তৈরি হবে। সেদিকে সবাইকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান তিনি।  

যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, খেজুর গাছ অস্তিত্বের সংকটে। কৃষিপণ্য হিসেবে এমনকি শিল্পপণ্য হিসেবে খেজুর গাছের গুড় ও রসের চাহিদা রয়েছে। সে কারণে এ গাছ রক্ষায় নতুন করে মানুষ জেগে উঠেছে। এটাকে উৎসাহ ও সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, খুলনা রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক রেজাউল হক ও যশোরের পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দীন আহম্মেদ।  

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্রের লং আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. এম শওকত আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান, সাবেক আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুচ আলী দফাদার, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা গোলাম মোর্শেদ ও উপজেলা প্রকৌশলী রিয়াসাত ইমতিয়াজ।

মেলায় স্টল দেওয়াদের মধ্যে সেরার পুরস্কার লাভ করেছেন সঞ্চডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, হয়াতপুরের আব্দুল গাজী ও রাজাপুরের মিজানুর রহমান। প্রধান অতিথি তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।