নীলফামারী: জেলার বাজারে ফুলকপির ও বাঁধাকপির দাম পাওয়া যাচ্ছে না। দাম এতটাই কমেছে যে, এই দুই জাতের সবজি এখন কৃষকদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার সকালে জেলার ডাইলপট্টি এলাকায় ভ্যানে করে ফুলকপি কপি বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ী রাফি। তিনি জানান, দুই টাকায় কিনে তিন টাকায় বিক্রি করছেন। এত অল্প দামের কারণে অনেকেই একসঙ্গে ৮-১০টি করে ফুলকপি কিনছেন, কেউ খাওয়ার জন্য, কেউবা গবাদিপশুর জন্য।
সদরের ককই সহদেব বড়গাছা এলাকার কৃষি শ্রমিক মোনতাজ আলী বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে বেশি দামের কারণে ফুলকপি কিনতে পারিনি। আজ ২৪ টাকায় আটটি কপি কিনেছি। কিছু নিজের জন্য, কিছু গরু-ছাগলকে খাওয়াব। ’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার নীলফামারীতে এক হাজার ১৭ হেক্টর জমিতে কপির চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে ভালো ফলন হলেও মৌসুমের শেষদিকে এসে বাজারে ব্যাপকভাবে দাম কমে গেছে। যেখানে মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি ফুলকপি ৭০-৮০ টাকা ও বাঁধাকপি ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেখানে এখন প্রতি পিস মাত্র দুই-তিন টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উৎপাদন খরচ না ওঠায় অনেক কৃষক ক্ষেতেই কপি ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ গবাদিপশুকে খাওয়াচ্ছেন। সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের দুবাছুরি গ্রামের কৃষক রতন রায় জানান, তিনি ৩২ শতক জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন। সার, সেচ, চারা ইত্যাদির পেছনে ১২ হাজার টাকা খরচ হলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় প্রায় ৮-১০ হাজার টাকা লোকসান হবে তার।
নীলফামারী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক আহমেদ বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে, তবে মৌসুমের শেষ দিকে এসে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকরা লোকসানে পড়েছেন।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, চাষ বেশি হওয়ায় বাজারে কপির সরবরাহও বেড়েছে, ফলে দাম পড়ে গেছে। এতে কৃষকরা তাদের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৫
আরএইচ