খুলনা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ছাত্র অর্ণব হত্যার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এখনও কারণ উদযাটন করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান মিঠু বলেছেন, ক্লু পাওয়া গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
খুবি ছাত্র অর্ণব হত্যাসহ খুলনার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খুলনার পক্ষ থেকে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে মহানগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও কেএমপি ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়।
এ সময় ছাত্র নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, খুলনায় একের পর এক খুন হলেও পুলিশের কার্যত কোনো তৎপরতা নেই। এখনও পুলিশ ফ্যাসিবাদের দোসরদের কথায় চলে। এ অবস্থা চলমান থাকলে কেএমপি কমিশনারের কার্যালয় নয়, প্রয়োজনে তার কক্ষে প্রবেশ করা হবে। বিকেলে নগরীর ময়লাপোতা মোড় থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে গ্লাক্সোর মোড়ের কেএমপি কমিশনারের কার্যালয় ঘেরাওকালে আজিমুল ইসলাম জিম, সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ, জহিরুল ইসলাম তানভীর, মো. আরিফুল ইসলাম প্রমুখ ছাত্র নেতারা বক্তব্য দেন।
বক্তারা আরও বলেন, স্বৈরাচারের দালালদের আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হবে না।
এদিকে অর্ণবের মোবাইলের সর্বশেষ ইনকামিং কলের সূত্র ধরে প্রথমে গ্রেপ্তার হওয়া অর্ণবের বন্ধু গোলাম কিবরিয়ার দুদিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। কিন্তু তার কাছ থেকে কী ধরনের তথ্য মিলেছে সেটিও বলছে না পুলিশ। সেই সঙ্গে ওই মামলায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- নগরীর সোনাডাঙ্গা আদর্শপল্লী এলাকার বাসিন্দা খোকন শেখের ছেলে মো. রমজান শেখ ও খুলনা সদর থানার মুন্সিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম মিঠুর ছেলে জাহেদুল ইসলাম তুরান। এ নিয়ে অর্ণব হত্যা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
অর্ণব হত্যা মামলার বাদী ও তার বাবা নিতিশ শীল বলেন, তার ছেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে চাকরির চেষ্টা করছিল। ঘটনার দিন ২৪ জানুয়ারি তার ব্যবসায়িক সাইডে শ্রমিকদের বেতন দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে নগরীর শেখপাড়া তেঁতুলতলা মোড়ের জহিরুলের চায়ের দোকানের সামনে পৌঁছালে রাত পৌনে ৯টার দিকে তাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এরপর তিনি পরদিন অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি কেএমপির সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু কী কারণে তার ছেলেকে হত্যা করা হলো সেটি বের করতে পারেনি পুলিশ।
অর্ণবের বাবা শোকাহত হওয়ায় মামলাটি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগসহ আইনগত বিষয় দেখভাল করছেন তার ছোট চাচা সুমন কুমার সরকার। তিনি বলেন, পুলিশ কী ধরনের তথ্য পেয়েছে সেটি এখনও তাদের জানানো হয়নি। আবার অর্ণবের বন্ধু গোলাম রব্বানীকে গ্রেপ্তার ও তাকে দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তার কাছ থেকে কী ধরনের তথ্য পুলিশ পেয়েছে সেটিও জানানো হয়নি। সব মিলিয়ে এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি অর্ণব হত্যার।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে নগরীর শেখপাড়া তেঁতুলতলা মোড়ে অস্ত্রধারীরা গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসনের ছাত্র অর্ণবকে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৫
এমআরএম/আরবি
