ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ ও পুনর্বাসন চান ক্ষমা পাওয়া সেই প্রবাসীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ ও পুনর্বাসন চান ক্ষমা পাওয়া সেই প্রবাসীরা সংবাদ সম্মেলনে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা

ঢাকা: আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি চেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে কারা নির্যাতিত প্রবাসীরা। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের পুনর্বাসনে ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরব আমিরাত ফেরত প্রবাসী খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, জুলাই বিপ্লবে প্রবাসীরা স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে মিছিল করে এবং রেমিট্যান্স বন্ধের কর্মসূচি পালন করেছিল। মিছিলকে কেন্দ্র করে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।  

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা মিছিলের সঙ্গে সম্পৃক্ত অথবা সম্পৃক্ত নয় কিন্তু স্বৈরাচারী সরকারের সমালোচনাকারী এ রকম অনেকের নামের তালিকা তৎকালীন কনসাল জেনারেল অ্যাম্বাসেডর জামালের মাধ্যমে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জমা দেয়।  

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সেই তালিকার সূত্র ধরে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আমাদের কাউকে ফোনকল করে ডেকে নিয়ে আবার কাউকে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর দীর্ঘদিন তাদের হেফাজতে ও পরে জেলে রাখে। জেলে নেওয়ার পর উচ্চ আদালতের মাধ্যমে ১০ থেকে ২৫ বছর বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আমরা কয়েকশ’ প্রবাসী মুক্ত হয়ে বাংলাদেশে ফেরত আসতে পেরেছি।

এ সময় খালেদ সাইফুল্লাহ তাদের ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-

১. আরব আমিরাতসহ ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। যারা বিদেশে যেতে চায় সরকারি উদ্যোগে বিনা খরচে পাঠাতে ব্যবস্থা করা। যাদের দেশে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আছে যোগ্যতা অনুসারে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা। সেসব দেশে যারা ব্যবসায়ী ছিলেন এবং নতুন করে যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদের ব্যাংক/যেকোনো সংস্থার মাধ্যমে বিনা সুদে প্রয়োজনীয় লোন দেওয়ার ব্যবস্থা করা। যারা বয়স্ক তাদের বিভিন্ন প্রকার সরকারি ভাতার আওতায় নিয়ে আসা।

২. সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ ফেরত প্রবাসীদের নো-এন্ট্রি দেওয়া হয়েছে। নো-এন্ট্রি তুলে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া।

৩. একই মামলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখনো গ্রেপ্তার চলমান রয়েছে, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে অতিদ্রুত গ্রেপ্তারি প্রক্রিয়া বন্ধ করা তথা মামলাটি শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া। এছাড়া এ মামলায় এখনো সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগারে যেসব বাংলাদেশি প্রবাসী বন্দি আছেন তাদের অতিদ্রুত মুক্ত করে নিয়ে আসা।

৪. যারা আমাদের নামের তালিকা সেসব দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দিয়েছিল, সে সময়ের কূটনৈতিক, কনসাল জেনারেল বিএম জামালসহ জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করা।

৫. ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মতো একটি ট্রাস্ট গঠন করা, যাতে দেশের স্বার্থে ক্ষতিগ্রস্ত যেকোনো প্রবাসী ক্ষতিপূরণ পেতে পারে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরের তালিকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থনের কারণে কারা নির্যাতিত হয়ে দেশে আসা প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করা।

৬. বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের মুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার লক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চাই। সে অনুষ্ঠানের জন্য সম্মতি জ্ঞাপন ও আমন্ত্রণ পৌঁছানোর জন্য সাতজনের প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি দেওয়া।

সংবাদ সম্মেলন আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রবাসী হাফেজ মুহাম্মদ, ফরিদ শাহিন, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৫
ইএসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।